Advertisement

কুষ্ঠরোগে বঞ্চনার শিকার, বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ভুলে ফিরে এসেছিলেন এই অভিনেত্রী

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট, ২০২৫

ডিম্পল কাপাডিয়া। আইএমডিবি
ডিম্পল কাপাডিয়া। আইএমডিবি

বলিউডের ইতিহাসে কয়েকজন অভিনেত্রীর গল্প সিনেমাকে হার মানায়। যাঁরা খুব অল্প বয়সেই খ্যাতি পান, আবার হঠাৎ করেই জীবনের মোড় ঘুরে যায়। এমনই একজন ডিম্পল কাপাডিয়া—মাত্র ১৪ বছর বয়সে যিনি রাতারাতি তারকা হয়ে উঠেছিলেন, আবার ব্যক্তিজীবনে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছেন।

শৈশবের রোগ
১৯৫৭ সালে জন্ম ডিম্পলের। মাত্র ১২ বছর বয়সে তাঁর কাঁধে ধরা পড়ে কুষ্ঠরোগ। সেই সময় এই রোগ মানেই ছিল সামাজিক বঞ্চনা। স্কুলে এক বন্ধুর পরিবার এমনকি তাঁকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছিল। এমনই দুর্দিনে গল্পটি পৌঁছায় কিংবদন্তি নির্মাতা রাজ কাপুরের কানে। সুন্দরী কিশোরী ডিম্পল কঠিন রোগের সঙ্গে লড়ছেন—এই গল্প তাঁকে নাড়া দেয়। ঠিক করেন, নতুন ছবিতে নায়িকা করবেন তাঁকেই।

১৪ বছর বয়সে ‘ববি’
১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় রাজ কাপুরের ববি। তখন ডিম্পলের বয়স মাত্র ১৪। স্ক্রিন টেস্টেই তাঁর নিষ্পাপ চোখ, স্বাভাবিক অভিনয় আর আত্মবিশ্বাস রাজকে মুগ্ধ করে। ঋষি কাপুরের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। মাত্র এক কোটি রুপিতে তৈরি ছবিটি তখন ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে সর্বাধিক আয় করা ছবি হয়ে ওঠে—ভারতে আয় করে ১১ কোটি রুপির বেশি। দেশ-বিদেশে বিপুল সাড়া ফেলে ‘ববি’। রাতারাতি ঘরে ঘরে জনপ্রিয় নাম হয়ে যান ঋষি-ডিম্পল।

তারকাখ্যাতির মধ্যেই বিয়ে
কিন্তু অভিনয়জীবন তখনই থেমে যায়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে করেন সুপারস্টার রাজেশ খান্নাকে—যিনি তাঁর চেয়ে দ্বিগুণ বয়সী। বিয়ের পরই ডিম্পল প্রায় এক দশক সিনেমা থেকে দূরে সরে যান। সংসারেই মনোযোগী হয়ে ওঠেন তিনি।

২৭-এ প্রত্যাবর্তন
বিয়ের সম্পর্কে ফাটল ধরতে বেশি সময় লাগেনি। অল্প বয়সে বিয়ে আর ব্যক্তিজীবনের চাপ তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। অবশেষে ২৭ বছর বয়সে ফেরেন রুপালি পর্দায়—১৯৮৫ সালে ‘সাগর’ ছবির মাধ্যমে। সেখানে সহশিল্পী ছিলেন কমল হাসান ও ঋষি কাপুর। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রমাণ করেন নিজের বহুমুখী অভিনয়দক্ষতা। ‘রুদালি’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’, ‘ফাইন্ডিং ফ্যানি’র মতো ছবিতে সমালোচক ও দর্শকের প্রশংসা কুড়ান তিনি।

রাজেশ খান্নার সঙ্গে প্রেমের স্মৃতি
এক সাক্ষাৎকারে ডিম্পল একবার বলেছিলেন তাঁদের প্রথম দেখা হওয়ার গল্প—‘আমরা যাচ্ছিলাম আহমেদাবাদে। রাজেশজি আমার পাশে বসেছিলেন। আমি তাঁকে দেখে খুব চতুরভাবে বললাম, সেখানে অনেক ভিড় হবে, আপনি কি আমার হাত ধরবেন? তিনি হেসে বললেন, অবশ্যই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, চিরদিনের জন্য? আর বাকিটা ইতিহাস।’

অসমাপ্ত বিয়ে, পূর্ণাঙ্গ ক্যারিয়ার
২৭-এ এসে বেদনাময় দাম্পত্য ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ডিম্পল কাপাডিয়া। কিন্তু পরের তিন দশক প্রমাণ করেন, তিনি কেবল তারুণ্যের প্রতীক নন, একজন শক্তিশালী অভিনেত্রীও।
ডিম্পলকে সবশেষ দেখা গেছে গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘মার্ডার মোবারক’ সিনেমায়।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম

Lading . . .