অধ্যাদেশ জারির দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রকাশ: ৬ আগস্ট, ২০২৫

রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে নিয়ে গঠিত প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগানে তারা দাবি জানান দ্রুত আইনি কাঠামো প্রণয়নের।
বুধবার সকাল ১০টার পর থেকেই ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে জড়ো হন প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এরপর বেলা ১১টার দিকে মিছিল শুরু হয় কলেজের ভেতর থেকে। মিছিলটি সায়েন্সল্যাব মোড় হয়ে নীলক্ষেত ঘুরে ইডেন মহিলা কলেজের সামনে অবস্থান নেয় কিছু সময়ের জন্য। পরে আবার নীলক্ষেত হয়ে ঢাকা কলেজে ফিরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি টানেন তারা।
আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ‘অধিভুক্ত সাত কলেজ’ পরিচয়ে তাদের শিক্ষাজীবন কেটেছে নানা সংকট ও অস্পষ্টতার মধ্যে। অধিভুক্তি শব্দটিকে তারা মনে করেন এক ধরনের অবমাননা এবং আত্মপরিচয়ের সংকট। তাই প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা স্বতন্ত্র পরিচয় ফিরে পেতে চান।
আরো পড়ুন : রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে রিভিউর রায় বৃহস্পতিবার
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দিয়ে সরকার আশ্বাস দিলেও অধ্যাদেশ জারি না হওয়ায় আমরা হতাশ। দ্রুত অধ্যাদেশ প্রকাশ না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ আবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
আন্দোলনের সংগঠক এবং সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পারসন আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষা সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্র আমরা আর সহ্য করব না। বহুদিন ধরে আমরা আন্দোলন করছি। এবার সময় এসেছে আমাদের স্বতন্ত্র পরিচয়ের বাস্তবায়ন দেখতে পাওয়ার।
তিনি আরো জানান, সরকার অধ্যাদেশ প্রণয়নের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আর নতুন করে কোনো অনিশ্চয়তায় ফেলে রাখা যাবে না।
শিক্ষার্থীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন, অধ্যাদেশ কার্যকরের প্রক্রিয়া দীর্ঘ পাঁচটি ধাপ পেরিয়ে যেতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের খসড়া প্রস্তুত, আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো, সংশোধনপূর্বক ফেরত, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ও গেজেট প্রকাশ। তারা আশঙ্কা করছেন, বিশেষ করে আইন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ধাপে এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হতে পারে।
তাদের দাবি, এখনই কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দৃশ্যমান না হলেও পূর্বের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী দেরির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই প্রশাসনিক ধীরগতির আগেই যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে অধ্যাদেশ প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ সাতটি সরকারি কলেজকে পৃথক করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে এটির নাম প্রস্তাব করে। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।