Advertisement
  • হোম
  • শিক্ষা
  • হচ্ছে না সিন্ডিকেট মিটিং, বাকৃবির ক্লাশ-পরীক্ষা বন...

হচ্ছে না সিন্ডিকেট মিটিং, বাকৃবির ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ ও বহাল হল ত্যাগের নির্দেশনা

যুগান্তর

প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান আন্দোলন কেন্দ্র করে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে মঙ্গলবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাড়ে ৪ ঘণ্টা আলোচনার পরে যে সিদ্ধান্তগুলো এসেছিলো তার কিছুই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. সোনিয়া সেহেলী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভার জন্য লিখিত ডকুমেন্ট প্রয়োজন। এজন্য শিক্ষার্থীদের দাবি এবং আমাদের পক্ষের দাবি নিয়ে একটি যৌথ ডকুমেন্ট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

তবে শিক্ষার্থীদের বারবার ডাকলেও তারা আসেনি। ফলে ডকুমেন্ট তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় উপাচার্যের পক্ষে ডকুমেন্ট ছাড়া সিন্ডিকেট সভা করা সম্ভব নয়।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ বলবৎ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের হাতে দেওয়া রয়েছে, যেকোনো বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবে এখন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের জন্য একটি লিখিত ডকুমেন্ট প্রয়োজন। সেটির জন্যই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হয়েছে।

তারা কেবল কালক্ষেপণ করেছে এবং এক ঘণ্টা যাবত তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার পরেও তারা আসেননি। এ পরিস্থিতিতে আমরা উপাচার্যের কাছে যৌথ বিবৃতি দিতে পারিনি।

এখন যদি শিক্ষার্থীরা কোনো কর্মসূচিতে যান এবং ভাঙচুর বা এ রকম কিছু করেন সেক্ষেত্রে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন তদারকি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু বন্ধ তাই স্থানীয় প্রশাসন আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখবেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এহসানুল হক হিমেল বলেন, আমরা ৬১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এরপরও আজকে তারা আমাদের মাত্র ৫ জনকে যৌথ বিবৃতির জন্য যেতে বলেছেন। গতকালের দীর্ঘ আলোচনায় আমাদের দাবি ও সিদ্ধান্ত সবই আমরা উল্লেখ করেছি এবং আমাদের স্বাক্ষরও দিয়েছি। এতকিছুর পরেও কেন আবার ৫ জনকে লিখিত দিতে হবে এটাই বোধগম্য নয়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান আন্দোলন নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত চলে এ আলোচনা। এতে শিক্ষার্থীদের ছয় দফার প্রথম দুই দফা মেনে নেওয়ার মৌখিক সম্মতি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মূল কম্বাইন্ড ডিগ্রিসহ বাকি চার দফা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আলোচনা চলাকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে আলোচনায় যুক্ত হন। এছাড়া আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোনিয়া সেহেলী, কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আকতারুজ্জামানসহ আন্দোলনকে ঘিরে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা এবং অর্ধশত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী।

আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা ডেকে হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করা হবে। আন্দোলনকারীদের একাডেমিক বা হলভিত্তিক কোনো বিষয়ে শাস্তি দিয়ে হয়রানি করা হবে না বলে লিখিতভাবে জানানো হবে। আমরা আশা করছি, আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাশ ও পরীক্ষা শুরু হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, স্যারদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি। আগামীকাল সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা হবে এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে ক্লাশ পরীক্ষা শুরু হওয়ার ব্যাপারে স্যাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সেজন্য আমরা আগামীকাল আমাদের আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি রাখছি না। তবে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে আমরা আবার আন্দোলনে ফিরে যাব।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ব্যাংক ও কোষাধ্যক্ষ কার্যালয় খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। তুলে নেয় রেল অবরোধ। যদিও তালাবদ্ধ রয়েছে প্রশাসনিক ভবন।

বুধবার দুপুরে সিন্ডিকেট মিটিংয়ে মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ পরীক্ষা চালু ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত থাকলেও তা হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত আলোচনার পূর্বাবস্থায় ফিরে গেল বিশ্ববিদ্যালয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা, বহাল থাকছে হল ত্যাগের নির্দেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন।

আরও পড়ুন

Lading . . .