Advertisement
  • হোম
  • শিক্ষা
  • জাবির ১৭ হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, স্বজনপ্রীতির অ...

জাবির ১৭ হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বিক্ষোভ, বাগছাসের উদ্বেগ

যুগান্তর

প্রকাশ: ১০ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৬টি ছাত্রী হলসহ মোট ১৭টি হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আলাদা আলাদাভাবে হলগুলোর কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রী হলের মধ্যে রয়েছে— নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল, প্রীতিলতা হল, ১৩ নং ছাত্রী হল, ফজিলাতুন্নেসা হল, রোকেয়া হল এবং বীর প্রতীক তারামন বিবি হল। ছাত্র হলের মধ্যে রয়েছে— আল-বেরুনী হল, শহীদ সালাম বরকত হল, আ:ফ:ম কামাল উদ্দিন হল, মওলানা ভাসানী হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল, ১০ নং ছাত্র হল, ২১ নং ছাত্র হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও মীর মশাররফ হোসেন হল।

ছাত্রী হল কমিটি

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল— সভাপতি: শাহানাজ পারভীন শানু, সাধারণ সম্পাদক: উম্মে হাবিবা বেলী, সাংগঠনিক সম্পাদক: জান্নাতুন নিসা মীম।

প্রীতিলতা হল— সভাপতি: হুমায়রা মারিওম হিমি, সাধারণ সম্পাদক: হ্যাপী আক্তার শিলা।

১৩ নং ছাত্রী হল— সভাপতি: তানজিলা হোসেন বৈশাখী, সাধারণ সম্পাদক: নাশরাহ মারজুকা।

ফজিলাতুন্নেসা হল— সভাপতি: দেবযানী ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক: সাবরিনা সুলতানা সুরভী।

রোকেয়া হল— সভাপতি: কাজী মৌসুমী আফরোজ, সাধারণ সম্পাদক: ইফফাত জাহান ইসুমনি।

বীর প্রতীক তারামন বিবি হল— সভাপতি: তাইয়্যেবা রাজিয়া মুসকান, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবিদা হক মাধুর্য্য, সহ-সভাপতি: আফরোজা আক্তার ইমা, সাধারণ সম্পাদক: শ্রাবন্তী মজুমদার সাথী, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: শায়লা সাবরিন নিঝুম, যুগ্ম সম্পাদক: নোসিন মোকাররমা তোরসা ও রিফাহ নানজীবা হিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক: সুমাইয়া সুলতানা ছিয়া।

ছাত্র হল কমিটি

আল-বেরুনী হল— সভাপতি: রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সিনিয়র সহ-সভাপতি: সৈয়দ শাহ শাফায়েত, সাধারণ সম্পাদক: মিনহাজুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: অপূর্ব রায় প্রিন্স, যুগ্ম সম্পাদক: বিজয় সাহা ও সাজিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক: মাহদী আল জুলফা।

শহীদ সালাম বরকত হল— সভাপতি: মো: সাইদুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবু জাফর মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আলিফ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: কামরুল হাসান হিরণ, সাংগঠনিক সম্পাদক: মাহমুদুল হাসান রাকিব।

আ.ফ.ম. কামাল উদ্দিন হল— সভাপতি: ফাহাদুর রহমান ভূঁইয়া শোভন, সিনিয়র সহ-সভাপতি: খায়রুল ইসলাম নাহিদ, সাধারণ সম্পাদক: মো. রিফাত হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম সম্পাদক: মো. জোনায়েদ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক: মাহমুদ মোহাম্মদ।

মওলানা ভাসানী হল— সভাপতি: ফেরদৌস রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবু নাঈম, সাধারণ সম্পাদক: মো. জাবের, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: হিমেল বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক: রাজিব হোসাইন।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল— সভাপতি: হামিদুল্লাহ সালমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আকাশ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক: তানভীর হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: মো: মাহমুদুল হাসান ইমন (বাবু), সাংগঠনিক সম্পাদক: আরাফাত খান।

১০ নং ছাত্র হল— সভাপতি: সাইফ বিন মাহবুব, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আব্দুল্লাহ আল রোমান, সাধারণ সম্পাদক: ফিরোজ আহমেদ সিয়াম, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: জিহাদ ওমর, সাংগঠনিক সম্পাদক: ইমন মোল্লা।

২১ নং ছাত্র হল— সভাপতি: সৌরভ মৃধা, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আল মুবদি নাফি, সহ-সভাপতি: সাইদুর রহমান সীমান্ত, সাধারণ সম্পাদক: ফিরোজ আহমেদ রিমন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: ইমরান নাজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক: খায়ের মাহমুদ।

শহীদ রফিক-জব্বার হল— সভাপতি: মো: জাহিদ খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবেশ আল মুবিন নাফি, সাধারণ সম্পাদক: গোলাম মাওলা নবীন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: জীবেশ পান্ডে, সাংগঠনিক সম্পাদক: তানজিম হোসেন।

শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হল— সভাপতি: ফিরোজ আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আবিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক: মো: হাসান মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: তৌহিদুর রহমান শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক: ইরফান ইবনে আমিন পাটোয়ারী।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল— সভাপতি: মেহেদী হাসান ইমন, সিনিয়র সহ-সভাপতি: সাব্বির আহমেদ, সহ-সভাপতি: এ: এম: রাফিদ উল্লাহ (রাফিদ), সাধারণ সম্পাদক: আল ফিসা হজরত জিসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: খন্দকার মুতাহাম্মিদ মুয়ীন, যুগ্ম সম্পাদক: ইরতিজা আলম হাসিন ও দেবজীত নন্দী সৃজন, সাংগঠনিক সম্পাদক: মো: রাকিব মাওলা।

মীর মশাররফ হোসেন হল— সভাপতি: শেখ সাদী, সিনিয়র সহ-সভাপতি: আরশাদ হাবিব বিশাল, সাধারণ সম্পাদক: সোহাগ আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক: জি: এম: তাজমুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক: সাইফুল ইসলাম শিবলু।

ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বিক্ষোভ

নতুন হল কমিটিতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এবং ত্যাগীদের অবমূল্যায়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাবি ছাত্রদলের একাংশ। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি কাজী নজরুল ইসলাম হল, রফিক-জব্বার হল হয়ে জেনারেটর বাজার অতিক্রম করে পুনরায় বটতলায় গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘বৈষম্যের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘অনিয়মের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘পকেট কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘সুপার ফাইভের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘ছাত্রলীগের কমিটি, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

জাবি শাখা ছাত্রদলের এক যুগ্ম আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্য কর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বরং স্বজনপ্রীতি করে এমন অনেককে রাখা হয়েছে যারা বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন না। কমিটিতে ছাত্রলীগের এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মিছিল শেষে বটতলায় স্লোগান চলাকালে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মোটরসাইকেলে সেখানে অতিক্রম করলে, কিছু নেতাকর্মী তাকে ধাওয়া দেন। পরে তিনি দ্রুত সেখান থেকে সরে যান।

সংবাদ সম্মেলনে বাগছাসের উদ্বেগ

এদিকে ১৭টি হলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), জাবি শাখা। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় বটতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাগছাস নেতারা অভিযোগ করেন, বিগত সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অবৈধ সিট দখল, গণরুম, গেস্টরুম এবং র্যাগিং কালচার চালু করেছিল।

তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে ওঠার পর শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে এই সংস্কৃতিগুলো বিলুপ্ত করা হবে। কিন্তু ছাত্রদল রাজনৈতিক কমিটি দিয়ে সেই প্রত্যাশাকে উপেক্ষা করেছে, যা পুনরায় গণরুম-গেস্টরুম কালচার ফিরিয়ে আনার ঝুঁকি তৈরি করছে।

বাগছাস নেতারা আরও বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও, বর্তমানে তাদের এই সিদ্ধান্ত ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে নতুন রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা, যা হতাশাজনক। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সচেতন শিক্ষার্থী ও সংগঠনকে এই ‘চেতনা-বিরোধী’ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি ঘোষিত ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটিকে সম্প্রসারণ করে নতুন করে ৭৫ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ২৯৬ জন সদস্য যুক্ত করা হয়েছে।

Lading . . .