আগামী একনেক সভায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুমোদন দিতে হবে
প্রকাশ: ১১ আগস্ট, ২০২৫

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলব আগামী একনেক সভাতেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির অনুমোদন দিতে হবে। কোনোক্রমেই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপির অনুমোদনে টালবাহানা চলবে না।
রোববার (১০ আগস্ট) সকালে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে আয়োজিত এক অবস্থান ও বিক্ষোভ বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য যে স্থানটি নির্বাচন করা হয়েছে, সেই স্থানের সঙ্গে চলনবিলের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও পরিবেশ মন্ত্রণালয় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের ডিপিপির অনুমোদনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি পরিবেশ উপদেষ্টাকে বলব, চলনবিল কোন কোন উপজেলা নিয়ে গঠিত, সেই সম্পর্কে আপনার ধারণা নেই। যারা আপনাকে এ সম্পর্কে বুঝিয়েছেন, তারা ভুল বুঝিয়েছেন। আমি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত স্থানের সমস্ত কাগজপত্র পড়ে দেখার চেষ্টা করেছি। সেখানে এই চলন বিলের সঙ্গে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই স্থানের কোনো সম্পর্কের বিষয় উল্লেখ নেই।
তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য যাকে যেখানে বলা দরকার আমি বলব। যেখানে যেতে হয় যাব। আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলব- রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবি। এ দাবিকে উপেক্ষা করা এ সরকারের উচিত হবে না। এ সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলিত সরকার। তাই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে ডিপিপির অনুমোদন দেওয়া উচিত।
উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামী শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এ অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. শাহজাহান আলী।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন- সলঙ্গা থানা জামায়াতের আশীর রাশেদুল ইসলাম শহীদ, মওলানা রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রেজেওয়া উল্লাহ সোয়াইব প্রমুখ।
এছাড়া এদিন একই স্থানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর আগে এদিন সকাল ৯টার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- হৃদয়, জাকারিয়া, সমুদ্র, মেরাজ, হাসান, রায়হান, মিলন, মাইশা প্রমুখ।
এদিকে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে উত্তরবঙ্গের চারটি রুট ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-পাবনা, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এতে এসব রুটের হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে যায়। এতে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। থমকে যায় উত্তরাঞ্চলের জনজীবন। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, শিক্ষার্থীরা হাটিকুমরুল গোল চত্বরের ধোপাকান্দি এলাকায় ঢাকামুখী ও উত্তরবঙ্গগামী লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে এ সময় অনেক যানবাহন সিরাজগঞ্জ শহর দিয়ে পার হয়। ফলে শহরেও তীব্র যানজট হয়।