Advertisement

সদরঘাটে জবি শিক্ষার্থীদের মারধর, আহত ৯

যুগান্তর

প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পুরান ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্দরবন-১২ লঞ্চের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অন্তত ৯ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা লঞ্চটি ঘেরাও করে ভাঙচুর করেন। এতে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ১ নম্বর ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাবিল বরিশালগামী সুন্দরবন-১২ লঞ্চে উঠলে লঞ্চকর্মীরা তাকে কেবিন ভাড়া নিতে জোর করেন। নাবিল তা প্রত্যাখ্যান করলে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকজন স্টাফ মিলে তাকে মারধর করেন। খবর পেয়ে নাবিলের সহপাঠী ও সিনিয়ররা ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—নাবিল (ফিন্যান্স ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ ), শের আলী (আইএমএল, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ), ব্রজ গোপাল রায় (সংগীত বিভাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ), জিলন (এমসিজে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ), ইমরোজ সিদ্দিক (আইন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ), আনিছ (থিয়েটার, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ), টিঙ্কু (ফিলোসফি, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ), মাকসুদুল হক (ইসলামিক স্টাডিজ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), রিহাব (কবি নজরুল কলেজ) এবং মুজাহিদ (সোহরাওয়ার্দী কলেজ)। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

এ ঘটনায় সদরঘাটের ইজারাদার ও দক্ষিণাঞ্চল শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার অনুসারীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, তার ঘনিষ্ঠ কিরনের নেতৃত্বে আজিজুল, রমজান, আনিছ, রফিক, কাদের, রাব্বি ও সাগরসহ কয়েকজন লঞ্চকর্মী হামলায় অংশ নেন। পরে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সুন্দরবন-১২ লঞ্চ ঘেরাও করে ভাঙচুর চালান। এতে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

গাজীপুর থেকে মাকে চিকিৎসা করিয়ে ফিরছিলেন বরিশালের যাত্রী রাজীব।

তিনি বলেন, রাতে ৮টার দিকে লঞ্চে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর শতাধিক শিক্ষার্থী এসে লঞ্চে ভাঙচুর চালায়। আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। টিকিট কেটেছি, এখন ফেরত পাব কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে।

এদিকে ঘটনার পর সদরঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক বলেন, সদরঘাটের ঘটনা সম্পর্কে জানার পর ঘটনাস্থলে আসি। সমস্ত কিছু বিবেচনা করে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি মেনে নেওয়ার শর্তে এ ঘটনার সুরাহা করা হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: কিরণকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে; তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা; সিসিটিভি ফুটেজ চেক; ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মোবাইল মানিব্যাগ ক্ষতিপূরণ; সাধারণ মানুষের হয়রানি ও কুলিদের অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে।

Lading . . .