Advertisement
  • হোম
  • বিনোদন
  • পাহাড়ে মেলেনি মায়ের দেহ, পূজার হৃদয়ে শুধু স্মৃতি

পাহাড়ে মেলেনি মায়ের দেহ, পূজার হৃদয়ে শুধু স্মৃতি

চ্যানেল আই

প্রকাশ: ২১ আগস্ট, ২০২৫

নিজের শর্তে জীবন যাপনের জন্যই পরিচিত ছিলেন মডেল ও নৃত্যশিল্পী প্রতিমা বেদী। ১৯৯৮ সালে পাহাড়ে গিয়ে ভূমিধসে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার। খুঁজে পাওয়া যায়নি দেহ। মেলেনি অনেক উত্তর।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মাকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি উজাড় করেছেন পূজা। প্রতিমাকে স্মরণ করে বললেন যেভাবে তিনি জীবন কাটিয়েছিলেন, সেভাবেই মৃত্যু বরণ করেছিলেন। পাহাড়ের কোলে শেষ যাত্রা, আর তার দেহ কোন দিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবু মেয়ের বিশ্বাস—মা সত্যিই এক মহিমাময় বিচিত্র জীবন যাপন করেছিলেন।

পূজার কথায়, “মায়ের চলে যাওয়া নিয়ে অনেক আক্ষেপ আছে। তিনি পঞ্চাশও ছুঁতে পারলেন না। কত কিছুই করার ইচ্ছা ছিল আমাদের একসঙ্গে। কত স্বপ্নই অপূর্ণ থেকে গেল। মা ছিলেন এমন এক নারী, যিনি নিজের ইচ্ছে মতো বাঁচতেন। তিনি যেমন জীবন বেছে নিয়েছিলেন, তেমনই নিজের মৃত্যুও বেছে নিলেন। মা সব সময় বলতেন, প্রকৃতির কোলে মিলিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে একাকার হয়েই বিদায় নিতে চান। আর শেষ পর্যন্ত সত্যিই তিনি সেই স্বপ্নের মতোই প্রকৃতির কাছে ফিরে গেলেন।”

নিজের শর্তে বেঁচেছেন প্রতিমা। তিনি চাননি মৃত্যুর পর কোনও শ্মশানে নিয়ে গিয়ে প্রথাগত শেষকৃত্যের আড়ম্বরের মধ্যে তাঁকে বিদায় জানানো হোক। পূজা বলেন, “মা সব সময়ই চেয়েছিলেন প্রকৃতির কোলে মিলিয়ে যেতে, আর সেটাই তাঁর কাছে ছিল জীবনের মহা-সমাপনী অনুষ্ঠান। ঠিক সেভাবেই সব কিছু ঘটল। তাঁর দেহ আর কোনও দিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানেন তো, তিনি একাকার হয়ে গিয়েছিলেন মহাবিশ্বের সঙ্গে, মাটির সঙ্গে। তিনি ছিলেন এক দুর্বার শক্তি, এক অনন্ত সত্তা।”

মৃত্যু সম্পর্কে কি কোন পূর্বাভাস পেয়েছিলেন প্রতিমা? জানতে চাওয়া হলে পূজার উত্তর, “তিনি একদিন হঠাৎ আমার কাছে এলেন। নিজের উইল লিখে আমাকে দিলেন, গয়না আমার হাতে তুলে দিলেন, সব নথিপত্র, সম্পত্তির কাগজপত্র আমার হাতে দিলেন। আর শুধু বললেন, ‘কখন কী হয়ে যায়, কেউ জানে না।’

তারপর প্রতিমা চলে গেলেন কুলু-মানালি। যাওয়ার আগে কন্যা পূজাকে লিখে গেলেন বারো পৃষ্ঠার এক চিঠি যেখানে জন্ম থেকে শৈশব, সম্পর্ক থেকে বিবাহ, সন্তান থেকে নৃত্যের সাধনা সবটুকু জীবনের গল্প এক সুতোয় গেঁথে দিয়েছিলেন। চিঠির শেষে লিখলেন, ‘আমি এখন কুলুতে আছি। কুলু মানে দেবতাদের উপত্যকা। আমার জীবনের জন্য, আমার প্রতিটি শ্বাসের জন্য, সব দেবতা-দেবীর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। আমি সুখী। আমি ভীষণ, ভীষণ সুখী।’

সেটিই ছিল তার কাছ থেকে শেষ বার্তা, শেষ চিহ্ন। আবেগে ভেসে পূজা বললেন, “কী অদ্ভুত যাত্রা, কী অপরূপ জীবন, কী অসাধারণ নারী আর কী অনন্য একজন মা ছিলেন তিনি।”- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

Lading . . .