Advertisement

জনগণের আকাঙ্ক্ষা না বুঝলে রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই: আমীর খসরু

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতেছবি: প্রথম আলো
সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতেছবি: প্রথম আলো

গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে দেশের জনগণের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, তা যে রাজনৈতিক দল বুঝতে পারবে না, তাদের বাংলাদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই।

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্র্যাব মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিস্ট আমলে গণমাধ্যম, বর্তমান অবস্থা: জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন। এ সেমিনারের আয়োজন করে জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল, যুক্তরাষ্ট্র।

স্বৈরাচারকে টিকে থাকতে হলে গণমাধ্যমের অধিকার কেড়ে নিয়েই টিকে থাকতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে গণমাধ্যম বন্ধসহ যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো ঘটারই কথা। কারণ, জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল করলে এ ধরনের ঘটনা না ঘটালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারতেন না।

বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাংবাদিকতা শুধু নয়, যাঁরা সত্যিকার অর্থে ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন, তাঁরা ব্যবসা করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ব্যবসা ছিল লুটপাটের ব্যবসা। এ জন্য সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসার সুযোগ ছিল না। একইভাবে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, রাজনীতিকে শুধু গণতন্ত্রায়ণ করলে চলবে না, অর্থনীতি ও গণমাধ্যমকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলেই গণতন্ত্র হবে না। প্রতিটি জায়গায় গণতন্ত্রের প্রতিফলন ঘটাতে না পারলে গণতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করবে না।

সাধারণ মানুষ অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে না পারলে রাজনীতি সফল হবে না এবং সাংবাদিকেরা যদি মুক্তভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে গণতন্ত্র প্রতিফলিত হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পথ চিরতরে রুদ্ধ করতে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করে। এই আইনে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৪৩৬টি মামলা হয়। আসামি করা হয় কমপক্ষে ৪ হাজার ৫২০ জনকে।

আশিক ইসলাম আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই ৫ বছরে কমপক্ষে ৪৫১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ৪৫১ জনের মধ্যে ২০৯ জন জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত এবং ১৯৭ জন স্থানীয় সাংবাদিক। অন্তত ৯৭ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৫০ জন স্থানীয় সাংবাদিক।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালির নোমানীর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ কাসেম। বিশেষ অতিথি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন হায়দারসহ আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম প্রমুখ।

Lading . . .