৩ দফা দাবিতে ছাত্র ফ্রন্টের ‘জুলাই জাগরণী’ সমাবেশ
প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সারা দেশে জুলাই গণহত্যার বিচার, আহতদের চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করাসহ ৩ দফা দাবিতে ‘জুলাই জাগরণী’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শনিবার (৯ আগস্ট) বিকাল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে ওই অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন, শহীদ ফারহানের পিতা শহীদুল ইসলাম, শহীদ গোলাম নাফিজের পিতা গোলাম রহমান, শহীদ আলভীর মাতা সালমা বেগম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, সমগীত, কোরাস, নাভিন মুর্শিদ, মাহা ও ওয়ারদার গান, অনিন্দ্য বিশ্বাস, কুহক, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (বাকৃবি শাখা), জুলাই প্রবাহ (ময়মনসিংহ শাখা) প্রমুখ।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, শহীদ এবং আহতদের পরিবার নানা ধরনের বিপদে আছে। আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে এক বছর পরও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা হয়নি। শহীদ এবং আহতদের পরিবারগুলো অবহেলিত হচ্ছে। অথচ সরকারের দায়িত্ব ছিল এই পরিবারগুলোর যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করা।
বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি ও দেয়ালের লেখাগুলোই ছিল আমাদের জুলাই ঘোষণা। দেয়ালের কথাগুলো বাস্তবায়নের পথ সরকার প্রসারিত করবে এটাই ছিল চাওয়া, যা এখনো হয়নি।
শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা গোলাম রহমান বলেন, যে পিতা ছেলের লাশ কবরে নিয়ে গিয়েছে, তার চাওয়া এই সরকার বুঝেনি, শুনতে চায় না। গণহত্যার বিচারের জন্য শহীদ পরিবারের সদস্যদের আন্দোলন করতে হচ্ছে, দরজায় দরজায় ঘুরতে হচ্ছে। আমরা আপনাদের কাছে ভিক্ষা চাই না। আমরা চাই, গণহত্যার বিচার। প্রথমে বিচার, তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আপনারা লড়াই ছাড়বেন না।
শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের জন্য আমার ছেলে জীবন দিয়েছে। অথচ সরকারের সেই দিকে যাত্রা দেখছি না।
সভাপতির বক্তব্যে সালমান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে শহীদ পরিবার এবং জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আজ শহীদদের স্মরণ মানে শুধু স্মৃতিচারণ নয়, নতুন সময়ের লড়াইয়ের জন্যে সংগঠিত হওয়ারও প্রয়োজন। শহীদদের কাঙ্ক্ষিত আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নের লড়াই জারি রাখতে হবে।