Advertisement

আসন পুনর্বহালের দাবিতে ৩ জেলায় বিক্ষোভ

কালবেলা

প্রকাশ: ৭ আগস্ট, ২০২৫

কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি : কালবেলা
কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি : কালবেলা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও বাগেরহাটে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার পৃথক সময় এসব কর্মসূচি হয়। এ সময় আসন বিন্যাস আগের মতো না থাকলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়।

কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসন থেকে অশ্বদিয়া ও নেয়াজপুর ইউনিয়নকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, স্মারকলিপি, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে জরুরি সভা করেছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

কুমিল্লায় বিক্ষোভে সদর দক্ষিণ, লালমাই ও কুমিল্লা মহানগর দক্ষিণ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন। সবার দাবি ছিল কুমিল্লা-৯ (সদর দক্ষিণ, মহানগর দক্ষিণ ১৯-২৭ নম্বর ওয়ার্ড ও নবগঠিত লালমাই উপজেলা) আসনের কাঠামো পুনর্বহাল করতে হবে। বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এ আন্দোলন শুধু একটি আসনের জন্য নয়, এটা জনগণের অস্তিত্ব ও ভোটাধিকার রক্ষার লড়াই।

সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী ১২ আগস্ট লালমাই ও ১৩ আগস্ট সদর দক্ষিণে বৃহৎ জনসভা করবে বিএনপি ও সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি।

নোয়াখালীতে গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও সদর উপজেলার অশ্বদিয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে সোনাপুর-কবিরহাট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে নেয়াজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্ব সুধারাম থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাবাসীর দাবির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিলে স্থানীয়রা অবরোধ তুলে নেন।

সমাবেশে বক্তারা সদর উপজেলার নেয়াজপুর ও অশ্বদিয়া ইউনিয়নকে আগের মতো নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সলিম উল্যাহ বাহার হিরণ, সদর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিম, জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল মোতালেব আপেল, নেয়াজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন বাবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন আলো, জেলা জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত, অশ্বদিয়া নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা সেলিম, অশ্বদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি হাসান মাহমুদ তানসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন সায়েম, অশ্বদিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন রিয়েল, নোয়াখালী শহর জামায়াত নেতা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে আসন কমানোর প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সভা করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের আহ্বায়ক শেখ শাহেদ আলী রবি, জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন মন্টু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি ডা. লুৎফুল কবির, সদস্য সচিব ডা. শামীম বেগ, বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কল্যাণ সমিতির জেলা শাখার চেয়ারম্যান গাজী মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তরফদার রবিউল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।

সভায় বক্তারা নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানান এবং চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাহার না হলে আগামী রোববার থেকে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন পেশাজীবীরা।

জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন মন্টু বলেন, বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করব। আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক ও নির্বাচন কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দেব। এর পরও যদি কমিশন প্রস্তাব থেকে না সরে, তাহলে রোববার থেকে লাগাতার আন্দোলনে নামব।

Lading . . .