প্রকাশ: ৯ আগস্ট, ২০২৫

সপ্তাহের সাত দিনের মাঝে মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র, মর্যাদাপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ দিন হচ্ছে জুমা। এই দিনটিকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন। পৃথিবীতে সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় দিন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং রাসুলও (সা.) । শুধু তাই নয়, এই দিনে মুসলিম উম্মাহর জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু করণীয়, যা পালন করলে মিলবে অপার সওয়াব ও পরকালীন সফলতা।
জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে কোরআন ও হাদিসে এসেছে অসংখ্য ফজিলতের বর্ণনা। তবে, আমাদের দেশে শুক্রবার এলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জুমা মোবারক’ বলে অভিবাদনের প্রথা দেখা যায়। কিন্তু জুমাবারকে সামনে রেখে এভাবে ‘জুমা মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা জানানো কি জায়েজ? এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান জানা প্রয়োজন।
হাদিসে জুমার দিনের জন্য আলাদা অভিবাদনের কোনো শব্দ বা বাক্য নেই। নবীযুগ ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। আর নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ যদি আমাদের (ইসলামের) সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়, এমন কোনো আমল করে, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (বোখারি : ৩৫০৮)
বিশেষজ্ঞ আলেমরা বলছেন, ‘জুমা মোবারক’ একটি দোয়া। শুধু দোয়া হিসেবে, কোনো প্রথা বা রীতিনীতির পেছনে না পড়ে ‘জুমা মোবারক’ বলা যাবে। তবে, প্রতি জুমাবার এটিকে আবশ্যকীয় আমল মনে করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, সাহাবিদের মধ্যে ঈদের দিনে পরস্পর পরস্পরকে অভিবাদন জানানো, শুভেচ্ছা জানানোর বিষয়টি প্রমাণিত। তবে জুমার দিনে আলাদা কোনো শুভেচ্ছা বিনিময় বা অভিবাদন জানানো বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। কাজেই হাদিসে জুমাবারকে ঈদের দিন উল্লেখ করা হলেও ঈদের দিনের মতো শুভেচ্ছা বিনিময় করা সুন্নাহসম্মত নয়। অতএব ‘জুমা মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা বিনিময় সুন্নাহ নয়।
সবাইকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, ‘জুমা মোবারক’ বলা-কে যদি আমরা নিয়মিত সিস্টেম বানিয়ে ফেলি, তাহলে এটি বিদআতের দিকে চলে যেতে পারে। সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, জুমাবারে মসজিদে আগে আগে যাওয়া সুন্নত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন,‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল। দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু কোরবানির সওয়াব, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব পাবে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে মিম্বারে ওঠেন, তখন ফেরেশতারা আর আমল লিখেন না, তারা খুতবা শুনতে থাকেন। (বোখারি : ৮৮১)
অর্থাৎ, জুমার দিন যত আগে মসজিদে উপস্থিত হওয়া যায়, সওয়াবও তত বেশি। মসজিদে দেরি করে গিয়ে নামাজে শরিক হওয়া গেলেও, আগেভাগে না আসার কারণে অমূল্য সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়ে যেতে হয়।
আরও পড়ুন