প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রথম আলো :
প্রথম আলো :দেশে নাকি অস্ট্রেলিয়ায়?
তাজ্জি হোসেইন: সাত দিন ধরে সবাই এ প্রশ্নই করছেন। ট্রেলার, টিজার ও সিরিজটিতে আমাকে দেখে সবাই মনে করেছেন, আমি ঢাকায়। আসলে আমি শুটিং শেষ করে মার্চেই অস্ট্রেলিয়ায় চলে এসেছি।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :চার বছর পর আপনার দেখা মিলল।
তাজ্জি হোসেইন: অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করার কারণে নিয়মিত কাজ করা হয় না। যে কারণে সহকর্মী, পরিচিতজন, শুভাকাঙ্ক্ষীরা দেখে অবাক হয়েছেন। ৯ মাস আমি অস্ট্রেলিয়াতেই থাকি। তিন মাস দেশে থাকার চেষ্টা করি। এই সময়ে অধীর আগ্রহ নিয়ে কাজের অপেক্ষায় থাকি। কেউ ডাকলে ভালো লাগে।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :অভিনয় থেকে সরলেন কেন?
তাজ্জি হোসেইন: ২০০৮ সালে আমি লাক্সে ফাস্ট রানার্সআপ হই। তখন থেকেই অভিনয়ে নিয়মিত হই। পরে ২০১১ সালে বিয়ে করে আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসতে হয়। অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত আমার ছিল না। ভাগ্যকে বিশ্বাস করি। ভাগ্যের কারণেই চলে আসতে হয়। পরে এখানে এসে পড়াশোনা করেছি। তখন আর অভিনয়ে ফেরা হয়নি। তবে অভিনয়ের প্রতি টান সব সময়ই ছিল।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :আর দেশে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন?
তাজ্জি হোসেইন: আমি চেষ্টা করে তো লাভ নেই। কারণ, সিদ্ধান্তটা আমার ছিল না। পরে একসময় এখানেই সংসার হয়ে গেল। বুঝতে পারলাম, ভাগ্যে এখানে থাকার কথাই লেখা রয়েছে। তত দিনে ৪ বছর কোনো অভিনয় করিনি। কিন্তু অভিনয়ের জন্য সব সময়ই আমি ছটফট করেছি।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :অভিনয়ে ফিরলেন কবে?
তাজ্জি হোসেইন: অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পাঁচ বছর পর নতুন করে অভিনয়ে ফেরার চেষ্টা করি। সময়টা ২০১৬ সাল। আমাকে আবার সংগ্রাম করতে হয়। আগে কাজ করে যে অবস্থানটুকু ছিল, সেটাও তত দিনে শেষের দিকে। কথায় আছে ‘চোখের আড়াল হলেই মনের আড়াল’। নিয়মিত কাজ না করলে কে ডাকবে? তারপরও কাছের পরিচালক–প্রযোজকেরা আমাকে অভিনয়ের সুযোগ দেন। এবার প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল ভাই আকা সিরিজের জন্য ডেকেছিলেন।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :অস্ট্রেলিয়ায় আপনি কী করেন?
তাজ্জি হোসেইন: এখানে আমি ফুলটাইম চাকরি করি। তিন সন্তান, স্বামী রয়েছে, সংসার দেখাশোনা করি। এখন এখানেই সেটেলড। প্রতিবছর দুই–তিন মাসের জন্য ছুটি নিয়ে দেশে যাই। দেশে থাকার সময়ে সুযোগ হলে অভিনয়ের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি। সেভাবেই এবার জানুয়ারিতে ঘুরতে এসে ‘আকা’ সিরিজে যুক্ত হওয়া।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :তিন সন্তান, সংসার, চাকরি কীভাবে সামলান?
তাজ্জি হোসেইন: এটা খুবই কঠিন কাজ। তবে আমার হোম অফিসের কারণে বড় একটা সুবিধা আছে। অস্ট্রেলিয়ায় আমার ও আমার স্বামীর ১২ মাসই বলা যায় হোম অফিস। যে কারণে সংসার সন্তানদের দেখাশোনা করতে পারি। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের থেকে পরিবারের লোক আসেন, তাঁরাও সহযোগিতা করেন। ব্যালেন্স করেই চলতে হয়।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আফসোস হয়?
তাজ্জি হোসেইন: এখনো কেউ কেউ আমাকে মনে করেন, অভিনয়ের জন্য ডাকেন, এটা আমাকে সম্মানিত করে। কষ্ট বা আফসোস একটাই, নিয়মিত অভিনয় করা হয় না, কখনো কখনো খারাপও লাগে। পেশার প্রতি আমার সম্মান ও ভালোবাসা ছিল। যে কারণেই লাক্সে অংশ নেওয়া। দীর্ঘদিন দূরে থাকার কারণে একসময় অভ্যস্ত হয়ে যাই। কিন্তু সবকিছুই আমার কাছে মনে হয় পূর্বনির্ধারিত। সেখানে আমার কোনো হাত নেই। ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি।
প্রথম আলো :
প্রথম আলো :‘আকা’ থেকে প্রাপ্তি কী?
তাজ্জি হোসেইন: কিছু দর্শক এখনো আমাকে মনে রেখেছেন, তাঁরা এখনো ভালোবাসেন, এটা এবারও বুঝতে পারলাম। এবার শুনতে হয়েছে, ‘অভিনয় ভালো করেছি, নিয়মিত কাজ করা উচিত’, এমন কথা। শিল্পী হিসেবে এটা আমার সেরা প্রাপ্তি। তাঁদের জন্যই মাঝেমধ্যে ভালো চিত্রনাট্য পেলে কাজ করব।