Advertisement

মা চলে গিয়ে জীবনটাকে বদলে দিয়ে গেল...

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd
দুই ধারাবাহিক দিয়ে কাজে ফিরেছেন অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষা । দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত হচ্ছে খুশবু আর বৈশাখীতে গিট্টু। তাঁর সাম্প্রতিক ব্যস্ততার খবরাখবর জানাচ্ছেন মনজুরুল আলম

সাত বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন অর্ষার মা। দীর্ঘ এই সময়ে মায়ের শারীরিক অবস্থা বুঝে শুটিং করেছেন। কখনো বাদ রেখেছেন শুটিং। এর মধ্যে হঠাৎ করেই জুনে মাকে হারান। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কাজে বিরতি নেন। ‘মা-বাবা চলে গেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তারা। মাকে এখন আমার সবচেয়ে বেশি দরকার। মা থাকাটা আমার কাছে শক্তির মতো ছিল। এখনো নিজেকে অনেকটাই দুর্বল মনে হয়,’ বলছিলেন নাজিয়া হক অর্ষা।

কাজেও থাকেন মা
কয়েক মাস আগেও শুটিংয়ে গেলে বড় একটি চিন্তা থাকত, মা কেমন আছেন, কী করছেন। যে কারণে শুটিংয়ের ফাঁকে সব সময়ই মায়ের খবর নেওয়া হতো। ছায়ার মতো ছিলেন মা। ‘মা চলে গিয়ে আমার জীবনটাকে বদলে দিয়ে গেল। আমার মধ্যে এতটা পরিবর্তন আগে কখনোই আসেনি। তিন মাস আগেও রক্তমাংসের একটা মানুষ ছিল। প্রতিদিন কত কথা হতো। আগে শুটিংয়ে এলে কী খাচ্ছি, কী করছি, কী রান্না হবে, কী পছন্দ করি—এসব নিয়ে কত কথা হতো। সেই মানুষটা নেই, ভাবতেই পারি না। শুটিংয়ে এলে মাকে খুব মিস করি। মা সব সময়ই আমার সঙ্গে থাকে। কখনো মনে হয়, হয়তো বাসায় গিয়েই মাকে পাব,’ কথা বলতে বলতে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী।

ভাবনায় চরিত্রে ডুব
সর্বশেষ ধারাবাহিক ক্যাম্পাস নাটকে অভিনয় করেছিলেন অর্ষা। এর মধ্যে ওটিটির কিছু কাজ করলেও পরে ছোট পর্দায় আর তাঁকে খুব বেশি দেখা যায়নি। যে কারণে শুধু শুধু সংখ্যা বাড়াতে চাননি এই অভিনেত্রী। ভালো গল্প, চরিত্রের অপেক্ষায় ছিলেন। খুশবু ধারাবাহিকে তেমন একটি চরিত্রই তাঁকে দিয়েছেন সাজ্জাদ সুমন। চরিত্রটির নাম সেতু। গ্রাম থেকে আসা মেয়েদের সে আগলে রাখে, পোশাককর্মীদের হয়ে অন্যায় আর হয়রানির প্রতিবাদ করে।

বিরতির আরও কিছু কারণও জানালেন অর্ষা, ‘মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার জন্য সময় নিয়েছি। এ ছাড়া কাজের মানটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। গল্প, চিত্রনাট্য, চরিত্রের গভীরতা, প্ল্যাটফর্ম—এগুলোও এখন গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক নাটকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো একটি কাজের শুরুটা ভালো থাকে, দর্শক তৈরি হয়। কিন্তু শেষ দিকে উপস্থাপনার কারণে একের পর এক দুর্বল একটি জায়গা তৈরি হয়। আমি চরিত্রে ডুবে থাকতে চাই। একই রকম কাজের সঙ্গে থাকতে চাই না।’

শিল্পীর দায়বদ্ধতা
অর্ষা মনে করেন, সাধারণ মানুষের যে দায়বদ্ধতা, শিল্পীর দায়বদ্ধতা তার চেয়ে অনেক বেশি। ‘শিল্পী ট্যাগ থাকলে দায়বদ্ধতা দু–তিন গুণ বেড়ে যায়। আমি কী করছি, সেটার ছাপ রেখে যেতে চাই। দর্শক অভিনীত চরিত্র দিয়েও প্রভাবিত হয়। খুশবু ধারাবাহিকে আমার চরিত্রের নাম সেতু। সমাজের ধাক্কা খাওয়া মেয়েদের হয়ে সে কথা বলে। গ্রাম ছেড়ে আসা মেয়েদের এই শহরে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। সেখানে মেয়েদের আশ্রয় দেয় সেতু। দেখবেন, আমাদের এখানে নারী চরিত্রগুলোকে শোপিসের মতো ব্যবহার করা হয়। নারীকেন্দ্রিক গল্পও কম। যে চরিত্রে নারীরা থাকেন, সেখানে ধীরস্থিরভাবে চরিত্রটি প্লে করতে হয়।’ তিনি আরও জানান, চরিত্রের মধ্যে ইতিবাচক জায়গাটা ধরে রাখতে চান। রুমান রুনি পরিচালিত বৈশাখী টেলিভিশনের ধারাবাহিক গিট্টুতেও তেমনই একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্ষা।

কেন সিনেমায় নেই
চার বছর আগে মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন অর্ষা। সেই থেকে এখনো যেখানেই যান, দর্শক তাঁর অভিনীত তানিয়া চরিত্রটির কথা বলেন। সিনেমায় যুক্ত হচ্ছেন কি না, এ নিয়ে অবশ্য খুব বেশি কথা বলতে চান না এই অভিনেত্রী। তবে জানালেন, সিনেমার গল্প তাঁর হাতে রয়েছে।

এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কনফার্ম না করে এখনই কিছু বলতে চাই না। আমি চাই, যে লেভেলের কাজ করেছি, সেটা যেন সিনেমার মধ্য দিয়ে ছাড়িয়ে যেতে পারি। এ জন্য আমি ধৈর্য ধরতে প্রস্তুত। তবে দর্শকদের সামনে ভালো খবর দেব।’

Lading . . .