বেশি সুদ পাওয়ার আশায় কিছু প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা রেখে অনেক মানুষ এখন সেই টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। সুদ তো দূরের কথা, মূল টাকাও ফেরত পেতেই তাঁদের হিমশিম অবস্থা। ফলে অনেক মানুষ ঠকে ঠকে শিখছেন। এ জন্য টাকা জমা রাখতে সবাই এখন ভালো ও বিশ্বস্ত ব্যাংকের খোঁজ করছেন। পাশাপাশি দীর্ঘ সময়ের গ্রাহকের আস্থা, বিশ্বাস ও ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে মানুষ পূবালী ব্যাংকে টাকা জমা রাখছেন।
গত কয়েক বছরে আমরা গ্রাহকের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। মানুষ এখন ঘরে বসেই হিসাব খুলে টাকা জমা করতে পারছেন। গত কয়েক বছরে আমরা সারা দেশে ২৫০টি উপশাখা খুলেছি। ৮০০টি ক্যাশ রিসাইক্লিং যন্ত্র বসিয়েছি। এ ছাড়া ২০ হাজার পয়েন্ট অব সেলস যন্ত্র বা পিএসও এবং ১ লাখ কিউআর কোড বসানো হয়েছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা পাইয়ের মাধ্যমে খুচরা ও করপোরেট গ্রাহকেরা ঋণ আবেদন, ঋণ পরিশোধ, ঋণপত্র খোলাসহ সব ধরনের সুবিধা পান।
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ডিজিটাল লেনদেনের যত উদ্যোগ নিয়েছে, তার সব কটির নেতৃত্ব দিয়েছে পূবালী ব্যাংক। আমাদের সব ডিজিটাল সেবা বিনা মূল্যে পান গ্রাহকেরা। ফলে প্রচুর গ্রাহকও পেয়েছি আমরা, যা আমাদের আমানত বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। আমাদের আমানতের সুদহার অনেক ব্যাংকের চেয়ে কম। এরপরও আমরা ভালো আমানত পাচ্ছি।
বর্তমানে পূবালী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক-সমৃদ্ধ বেসরকারি ব্যাংক। দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের আস্থা রয়েছে এই ব্যাংকের ওপর। এ কারণে খুচরা আমানত অনেক বেশি। পূবালী ব্যাংকের ৬৫ শতাংশ আমানত সাধারণ গ্রাহকের। এসব আমানতের সবই কম সুদে পাওয়া গেছে। এখন ডিজিটাল সেবার জোয়ার চলছে। সামনে ঋণও ডিজিটাল মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। আমরা সেই পথে এগোচ্ছি।
গ্রাহকের আমানত আমরা নিরাপদ রাখতে সব সময় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছি। আমানতের টাকা অর্ধেক ঋণ হিসেবে ও অর্ধেক সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
আমাদের দেশের মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা রয়েছে—অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা। এগুলোর পশ্চাৎ ও সম্মুখ সংযোগ খাতে আমরা ঋণ দিচ্ছি। এসবের চাহিদা কখনো শেষ হবে না। তাই এসব ঋণ আদায়ের হারও ভালো। পাশাপাশি আমাদের বড় একটি অগ্রাধিকার পরিবেশ নিয়ে কাজ করা। যেসব প্রকল্পে দূষণসহ পরিবেশগত ঝুঁকি একেবারেই কম, আমরা সেখানে বিনিয়োগ করছি। যেসব প্রতিষ্ঠানের পরিবেশবান্ধব সনদ রয়েছে, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সেসব ব্যাংককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেমন বিশ্বের লিড প্লাটিনাম র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬টি বাংলাদেশে অবস্থিত। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানেই পূবালী ব্যাংক অর্থায়ন করেছে।
মোহাম্মদ আলী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পূবালী ব্যাংক