পূর্ব তিমুরে গণবিক্ষোভের মুখে এমপিদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনার উদ্যোগ বাতিল
পূর্ব তিমুরের সরকার পার্লামেন্ট সদস্যদের জন্য বিলাসবহুল এসইউভি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে ওই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয় সরকার।
আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দরিদ্রতম দেশের অন্যতম পূর্ব তিমুর।
চলতি সপ্তাহে লাখো ডলার খরচে গাড়ি কেনার উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ছাত্র-শিক্ষার্থীরা দেশটির রাজধানী দিলি'র সড়কে নেমে আসে। টানা দুই দিন পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলে।
গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত বাতিলের ঘোষণার পরও বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়নি বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
আজ বুধবার টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানী দিলির পার্লামেন্ট ভবনের কাছে প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়।
বিক্ষোভকারী ত্রিনিতো গাইও (৪২) এএফপির সংবাদদাতাকে বলেন, 'গুজব শুনেছি, গাড়িগুলো ইতোমধ্যে দেশের পথে রওনা হয়েছে।'
'এ কারণে আমার মতো অনেক মানুষ ও শিক্ষার্থীরা আজ এখানে জমায়েত হয়েছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই আমাদের দেওয়া করের অর্থ যেন ভুল কাজে ব্যবহার না হয়', যোগ করেন তিনি।
গত বছরের বাজেটে দেশটির পার্লামেন্টের ৬৫ সদস্যের প্রত্যেকের জন্য একটি করে টয়োটা প্রাডো এসইউভি গাড়ি কেনার জন্য ৪২ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।
পার্লামেন্টের আনুষ্ঠানিক নথি অনুযায়ী, এ বিষয়ে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল।
ওই নথি প্রকাশ্যে আসার পর পূর্ব তিমুরের বাসিন্দারা রাগে ফেটে পড়েন এবং পথে নেমে আসেন।
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন।
প্রবল বিক্ষোভের মুখে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয় পার্লামেন্ট।
পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে '২০২৫ সালের বাজেটে অনুমোদিত নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ' বাতিলের সিদ্ধান্ত পাস হয়।
সোমবার ও মঙ্গলবারের বিক্ষোভ অল্প সময়ের মধ্যে সহিংসতায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে ইট ছুড়লে জবাবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পাল্টা জবাব দেয়।
মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বিক্ষোভের নামে সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না।
২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে পূর্ব তিমুর। এর আগে প্রায় ২০ বছর ইন্দোনেশিয়ার অংশ ছিল দেশটি।
তবে স্বাধীনতা অর্জন করলেও আর্থিক বৈষম্য, অপুষ্টি ও বেকারত্বের মতো সমস্যায় ওই দেশের মানুষ জর্জরিত।
তেলের মজুদের ওপর দেশটির অর্থনীতি বড় আকারে নির্ভরশীল।