কুয়েটে সংঘর্ষ: আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের করা মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন ও ইব্রাহিম হাওলাদার এবং কর্মী শফিকুল ইসলাম।
গতকাল শনিবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য প্রকাশ করা হয়। এদিকে গতকাল রাতে খুলনা মহানগর বিএনপির গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁদের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের দিন পাঁচজনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছিলেন সেনাসদস্যরা। তাঁদের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। গত শুক্রবার তাঁদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
বিবৃতি দেওয়া নেতারা হলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (বকুল), তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম (মনা) ও সদস্যসচিব শফিকুল আলম (তুহিন)।
কুয়েটের মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে খুলনা মহানগর বিএনপি নেতারা বলেছেন, ‘এরই মধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন ও ছবি, ভিডিও ফুটেজ পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে দেশবাসী জানতে পেরেছে, কুয়েটে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার সূত্রপাত গুপ্ত একটি ছাত্রসংগঠন ঘটিয়েছে।’
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘সেই ঘটনায় কুয়েট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা পাঁচ শতাধিক আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের হয়রানি করছে। ইতিমধ্যে গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের নেতা–কর্মীদের হামলায় মারাত্মক আহত খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আবদুল করিম মোল্লা, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন, ইব্রাহিম হাওলাদার ও বিএনপির সর্মথক শফিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে প্রেরণ করেছে, যা রীতিমতো নিন্দনীয় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিবৃতিতে বিএনপির নেতারা আরও বলেন, ‘কুয়েটের ভিসি, শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মীদের ওপর গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসী হামলার হাজারো প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনে পুলিশ অসুস্থ চার নেতা–কর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের পথ অনুসরণ করেছে, যা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। বিশেষ দলের প্রেসক্রিপশনে যেসব চিকিৎসক, পুলিশ সদস্য এহেন নিন্দনীয় কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিএনপি। কুয়েটের ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয়, গুপ্ত ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীরা কুয়েট ভিসি, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছেন। অবিলম্বে ওই গুপ্ত সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় বিএনপি বিকল্প পথে হাঁটতে বাধ্য হবে।’