বাংলাদেশ ব্যাংকফাইল ছবি

শরিয়াহ ব্যাংকগুলোর আমানত একমাসে বেড়েছে ৮,৩৮৫ কোটি টাকা

রাজনৈতিক পটপরির্তনের পর ইসলামী ব্যাংকের আমানত প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে একীভূতের আওতায় আসা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের আমানত প্রতিনিয়ত কমছে। এরপরও সামগ্রিকভাবে শরিয়াহভিত্তিক ১০ ব্যাংকের আমানত এক মাসেই বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।

ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর আর্থিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের শরিয়াহভিত্তিক ১০ ব্যাংক হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। গত সরকারের মেয়াদে শাহ্জালাল ইসলামী ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ছাড়া সব কটিতে আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূতের আওতায় এসেছে। আর ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছে ইসলামী ব্যাংক ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক।

জানা গেছে, ইসলামি ১০ ব্যাংকের আমানত চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়েছে। মে মাস শেষে এই ব্যাংকগুলোর মোট আমানত ছিল ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯৪ কোটি টাকা, যা জুন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯ কোটি টাকায়, অর্থাৎ এক মাসে আমানত বেড়েছে ৮ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।

মাসভিত্তিক আমানতে প্রবৃদ্ধি হলেও ইসলামি ব্যাংকগুলোর গত এক বছরে আমানত কমেছে। গত বছরের জুনের তুলনায় চলতি বছরের জুন শেষে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মোট আমানত ১ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছে। গত বছর জুনে এসব ব্যাংকের আমানত ছিল ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। তার মানে চলতি বছরের জুন শেষে সেই আমানত ৪ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা কমেছে।

এদিকে আমানত কিছুটা বাড়লেও এই খাতের ব্যাংকগুলোর রেমিট্যান্স, আমদানি ও রপ্তানি আয়েও শ্লথগতি রয়ে গেছে। গত মে মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৬ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল, যা জুনে কমে হয়েছে ৬১ কোটি ডলার, অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে প্রবাসী আয় কমেছে ৫ কোটি ডলার বা ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। মে মাসে ব্যাংকগুলো আমদানি বিল পরিশোধ হয়েছিল ১১১ কোটি ডলার, যা জুনে ৮৮ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। এক মাসে আমদানি বিল পরিশোধ কমেছে ২৩ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

ইসলামি ব্যাংকগুলোর পণ্য রপ্তানি আয়েও একই ধারা দেখা গেছে। মে মাসে ৭২ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় জুনে কমে দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ডলার। তার মানে এক মাসের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৪ কোটি ডলার বা ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছরে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানত প্রায় ৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ প্রবৃদ্ধির সিংহভাগ প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো থেকে এসেছে। প্রচলিত ধারার ব্যাংকের আমানত ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত বৃদ্ধি পায় মাত্র ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ফলে আমানতের বাজারে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর হিস্যা ২০২৪ সালের জুনে ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ থাকলেও চলতি বছরের জুন শেষে কমে হয়েছে ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথাগত ব্যাংকগুলোর হিস্যা এ সময়ে বেড়েছে।