বলিউডের বিরক্তিকর পাঁচ সিক্যুয়াল

বলিউডের বিরক্তিকর পাঁচ সিক্যুয়াল

হলিউডের মতো বলিউডেও সিক্যুয়াল সিনেমা নির্মিত হয় নিয়মিত বিরতিতে। বলিউডে সাধারনত সিক্যুয়াল সিনেমার ক্ষেত্রে কমেডি বা ভৌতিক গল্পকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। থ্রিলার বা অ্যাকশনও যে নেই তা কিন্তু নয়। কিন্তু হলিউডের তুলনায় বলিউডে সিক্যুয়াল সিনেমার সাফল্যের হার অনেক কম। কিছু ক্ষেত্রে বিরক্তিকরও বটে। সিক্যুয়ালের ক্ষেত্রে প্রথমটির চেয়ে যদি দ্বিতীয় ভালো না হয় তাহলে সেটি ব্যবসায়িকভাবে হুমকির মধ্যে পড়ে। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ কমে যায়। দর্শকের কাছে বিরক্তিকর ও হতাশাজনক পাঁচটি বলিউড তথা হিন্দি সিনেমা নিয়ে এ প্রতিবেদন।

তালিকার পাঁচ নাম্বারে আছে ‘ভূত রিটার্নস’। রাম গোপাল ভার্মা পরিচালিত ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাটি এখন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম প্রাইম ভিডিওতে প্রদর্শিত হচ্ছে। এর আইএমডিবি রেটিং ২.৭/১০। রেখা, অজয় দেবগন, নানা পাটেকর, ফারদিন খান এবং উর্মিলা অভিনীত ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভূত’ ছিল সম্ভবত হিন্দি সিনেমার প্রথম সত্যিকার অর্থেই ভুতুড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভৌতিক সিনেমা। রাম গোপাল ভার্মা ২০১২ সালে ‘ভূত রিটার্নস’ নামে পুরনো ‘ভূত’কে পর্দায় ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু এ সিনেমায় জে.ডি. চক্রবর্তীর সঙ্গে মণীষা কৈরালার দূর্বল অভিনয় রসায়ণ এবং পোকামাকড় খাওয়া গল্প দর্শকদের মধ্যে রীতিমতো বিরক্তির উদ্রেক ঘটিয়েছে।

তালিকার চার নাম্বারে রয়েছে ‘হাঙ্গামা-২’। ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত প্রিয়দর্শন পরিচালিত এ সিনেমাটি বর্তমানে জিওহটস্টার স্ট্রিমিং হচ্ছে। এর আইএমডিবি রেটিং ৩.২/১০। প্রিয়দর্শনের অনেক কমেডির মতো ২০০৩ সালের ‘হাঙ্গামা’রও প্রত্যাবর্তন চেয়েছিলেন দর্শকরা। অসাধারণ কমেডি এবং নিখুঁত অভিনয়ের জন্য সেটি দর্শকচাহিদার তুঙ্গে ছিল। তবে প্রিয়দর্শন তার মালায়ালাম ‘মিন্নারাম’ (১৯৯৪) পুনর্নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেন, এবং সেটি ‘হাঙ্গামা-২’ নামে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করেন। ফলাফল, আরও একটি বিরক্তিকর ও হতাশাজনক সিনেমার সঙ্গে পরিচিত হলো দর্শকরা।

তালিকার তিন নাম্বার স্থান পেয়েছে বরুণ ভি. শর্মা পরিচালিত ‘বান্টি অউর বাবলি-২’। বর্তমানে স্ট্রিমিং হচ্ছে প্রাইম ভিডিও, অ্যাপল টিভি প্লাস-এ। এর আইএমডিবি রেটিং ৪.১/১০। অনেকের কাছে, পুরনো ‘বান্টি অউর বাবলি’ মূলত গান ও টোটাল এন্টারটেইমেন্টের প্যাকেজের চেয়ে বেশি কিছু ছিল। করোনাকালীন লকডাউনের শেষের দিকে, ইয়াশরাজ ফিল্মস এ সিনেমাটির সিক্যুয়েলের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয় এবং একটি এলোমেলো ‘কন ড্রামা’ তৈরি করে, যেখানে মূল সুরকার শঙ্কর-এহসান-লয়ও অবিশ্বাস্যভাবে অফফর্ম ছিলেন। ফলাফল, বক্স অফিসে ‘বান্টি অউর বাবলি-২’ খরচের মাত্র অর্ধেক তুলতে সক্ষম হয়েছে! পাশাপাশি তালিকায় আরও একটি বিরক্তিকর সিনেমা হিসাবে নাম লিখিয়েছে।

তালিকায় দুই নাম্বারে আছে অশোক ত্যাগীর ‘রিটার্ন অব জুয়েল থিফ’। এটি বর্তমানে স্ট্রিমিং হচ্ছে ইউটিউবে। এরপর আইএমডিডি রেটিং ৪.৪/১০। বিজয় আনন্দের মাইলফলক থ্রিলার ক্লাসিক, ‘জুয়েল থিফ’ (১৯৬৭) এর মূল গল্প, ট্রিটমেন্ট, অভিনয় এবং সংগীতের জন্য অমর হয়ে আছে। কিন্তু ২৯ বছর পরে অশোক কুমার এবং দেব আনন্দকে আবার এক করে কেন একটি নতুন সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার রহস্য এখনও অমীমাংসিত, যেটা ছিল মূল সিনেমার গল্পের দূর্দান্ত সাসপেন্সের বিপরীতে! অশোক ত্যাগী পরিচালিত সিক্যুয়ালটিতে জ্যাকি শ্রফ, মাধু, অনু আগরওয়াল এবং শিল্পা শিরোদকরও ছিলেন, তবু এটি বিপর্যয় সামলাতে পারেনি। যদিও যতীন-ললিত কিছু ভালো গান দিয়েছেন, কিন্তু তাতে বিরক্তি কেটে গেছে এমনটাও নয়!

তালিকার এক নাম্বারে রয়েছে সাগর ব্যালারি পরিচালিত ‘ভেজা ফ্রাই-২’। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাটি বর্তমানে স্ট্রিমিং হচ্ছে প্রাইম ভিডিও এবং ইউটিউবে। এর আইএমডিবি রেটিং ৪.৮/১০। সাগর ব্যালারির ‘ভেজা ফ্রাই’ ছিল ২০০৭ সালের দারুন সফল একটি কমেডি। অবশ্য অনেকের মতে, এটি ছিল ফরাসি সিনেমা ‘লে ডিনার ডি কনস’র (১৯৯৮ প্রায় ফ্রেম-টু-ফ্রেম রিমেক। তবে ভেজা ফ্রাই সুপার-হিট হয়েছিল এবং এর বাজেটের ছয় গুণেরও বেশি আয় করেছিল। কিন্তু ‘ভেজা ফ্রাই-২’ বিদেশে শুটিং করে উচ্চাভিলাষীভাবে গল্প চালিয়ে নিয়ে গেলেও, এটি কেবল একটি বিপর্যয়ই ছিল না, দর্শকদের মধ্যে যথেষ্ট বিরক্তির উদ্রেক ঘটিয়েছে।