বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খুব কমই প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাইফ হাসান। ডানহাতি এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার সর্বশেষ ২০২৩ সালে চীনের হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন। এর আগে ২০২১ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেন দুটি ম্যাচ। হাংজুতে একটি ম্যাচে ৫০ রান করেছিলেন। মিরপুরে জাতীয় দলের হয়ে খেলা দুই ম্যাচে করেন ১ ও ০। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ৫ ম্যাচে তার রান মাত্র ৫২, বল হাতেও ছিলেন উইকেটশূন্য।
প্রায় ব্যর্থ শুরু বলা যায়। তবে গেল দুই বছর নিজেকে নতুন করে গড়েছেন সাইফ। ফলস্বরূপ ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ব্যাট ও বল হাতে সাফল্য পাচ্ছেন। ডিপিএল, বিপিএল, জিএসএল কিংবা ‘এ’ দল সবখানেই নিজের সক্ষমতার জানান দিচ্ছেন। পুরস্কার হিসেবে আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন সাইফ। এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা সাইফ নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন ঢাকা পোস্টকে। তার সঙ্গে কথা বলেছেন ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব শাওন।
দুই বছর পর জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন…
সাইফ : অবশ্যই দারুণ অনুভূতি। অনেকদিন পরে জাতীয় দলে আবার সুযোগ পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। সবই আল্লাহর ইচ্ছা, ইনশা-আল্লাহ সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। কষ্ট করেছি দেখেই সুযোগ পেয়েছি। আরও যদি কষ্ট করি এবং প্রসেস ধরে রাখতে পারি, তাহলে আরও ভালো করতে পারব।
এশিয়া কাপের মতো বড় ইভেন্টে সুযোগ পেলেন, বাড়তি চ্যালেঞ্জ থাকছে কি না
সাইফ : চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিচ্ছি না, আমি এনজয় করতে চাচ্ছি। আগে অনেক প্রেশার নিয়ে নিতাম, যদি এনজয় করতে না পারি তাহলে আমি আমার সেরাটা দিতে পারব না। তাই আগে এনজয় করতে হবে, তাহলে নিজের সেরাটা দিতে পারব। এশিয়া কাপ অবশ্যই বড় একটা ইভেন্ট। আমার মনে হয় আমাদের দলও অনেক ব্যালেন্সড, অনেক ভালো করছে। দলের পরিবেশ ভালো, সবাই যদি সবার সেরাটা দিতে পারে অবশ্যই ভালো কিছু করা সম্ভব।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও নিয়মিত হচ্ছেন, দায়িত্ব কতটা বেড়েছে?
সাইফ : বোলিংটা আমি সবসময় এনজয় করি। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও শেষ কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বোলিং করছি। প্রিমিয়ার লিগেও বোলিং করেছি, বলা যায় নিয়মিত হচ্ছি, যেহেতু বোলিংটা আমার দ্বিতীয় স্কিল। উপভোগ করার চেষ্টা করি, (নুরুল হাসান) সোহান ভাইও অনেক অ্যাপ্রিশিয়েট করে আমার বোলিংয়ের। এ ছাড়া আকবর আলীও করে।
যাদের অধীনে খেলেছি, তারা সবাই অনেক বিশ্বাস করে বলেই আমাকে বোলিংটা দেয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে বোলিং করেছি যেটা আসলে আমারও অনেক উপকার হয়েছে। এখন বোলিং করাটা অনেক সহজ মনে হয়। সহজ বলতে ভালো অনুভব করি বোলিং করার সময়।
জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময়কার ভুলগুলো থেকে নিশ্চয়ই শিখেছেন
সাইফ : সেসব নিয়ে কাজ করেছি অনেক। যেহেতু আবার খেলব ইনশা-আল্লাহ, এখন বোঝা যাবে ঠিকঠাকভাবে। বিগত সময়ে কষ্ট করেছি, সেই পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি সম্ভবত। খেলার সুযোগ পেলে যে ভুলগুলো ছিল অতীতে, সেগুলো কাটানোর চেষ্টা করব।
আরও পড়ুন
কোচ সোহেল ইসলামের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে দেখা যেত আপনাকে…
সাইফ : আমি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সোহেল স্যারের অধীনে খেলেছি। ‘এ’ দলে খেলেছি (মিজানুর রহমান) বাবুল স্যারের কোচিংয়ে। যখন কোনো খেলা থাকতো না তখন আমি মাসকো ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন করতাম। সেখানে অনেকদিন ধরেই আমি প্র্যাকটিস করেছি, তখন (মোহাম্মদ) সালাউদ্দিন স্যার ছিলেন। আমার উন্নতির পেছনে অনেকেরই অবদান রয়েছে। অফ টাইমে মাসকোতে অনুশীলন আমার অনেক কাজে দিয়েছে।
জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর কখন জেনেছেন, পরিবারের প্রতিক্রিয়া কেমন?
সাইফ : গতকাল রাতেই জেনেছি দলে ডাক পাওয়ার খবর। ঠিক তখন ঘুমানোর আগমুহূর্তে, অস্ট্রেলিয়ায় তখন অনেক রাত। ফলে তখন পরিবারের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। আজকে কথা হয়েছে, সবাই অনেক খুশি। আমার একটা বাচ্চা আছে সামনে দুই বছর পূর্ণ হবে, সেও আমাকে দেখে খুশি হবে।
একাদশে সুযোগ পেলে কোন লক্ষ্যটা পূরণ করতে চান?
সাইফ : জাতীয় দলের হয়ে ফিল্ডিং, বোলিং বা ব্যাটিং–সব বিভাগে অবদান রাখতে চাই। দলের জন্য ইমপ্যাক্ট রাখতে চাই, অবদান রাখতে চাই। দলের মধ্যে যেন আমার ভালো একটা ইনভলভমেন্ট থাকে এটাই আসলে চাওয়া।
টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আপনার দায়িত্বের কথা জানানো হয়েছে কি না
সাইফ : না, এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে সেভাবে কথা হয়নি। অস্ট্রেলিয়ায় আছি যেহেতু এখানে শুধু রাজ (আব্দুর রাজ্জাক) ভাই রয়েছেন। উনি অভিনন্দন জানিয়েছেন, আর বলেছেন সুস্থ থাকতে.. এতটুকুই আরকি।
এসএইচ/এএইচএস/জেএস