ছবি: স্টার

‘বড় শট মারলে আপনি যেকোনো বিপদ থেকে বেরুতে পারবেন’

অধিনায়ক লিটন দাস নিজের ব্যাটিং শেষ করেও মাঠ ছাড়লেন না। প্যাড পরা অবস্থাতেই দাঁড়িয়ে গেলেন আম্পায়ারের জায়গায়, সতীর্থদের ব্যাটিং দেখছিলেন মনোযোগ দিয়ে। তখন চলছিলো লোয়ার অর্ডারের প্রস্তুতি। জাকের আলি অনিক, নুরুল হাসান সোহানরা উদ্ভাবনী শটের পাশাপাশি পেশির জোরে খোঁজ করছিলেন সর্বোচ্চ রানের। আবুধাবিতে যে দুদিন বাংলাদেশ অনুশীলন করল, তাতে লক্ষ্যণীয়ভাবে বড় শটের মহড়াই ছিলো বেশি। টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রস্তুতিতে এটা স্বাভাবিক দৃশ্যও বটে।

টি-টোয়েন্টিতে ছক্কা মারার হারে কদিন আগে জিম্বাবুয়ে থেকেও পিছিয়ে ছিলো বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পর এক ধাপ এগিয়েছেন লিটন দাসরা। তাতেও অবশ্য অবস্থান এখনো দশে। সর্বশেষ দুই বছরের হিসেব করলে আবার উন্নতি বেশ স্পষ্ট।

১৯৭টি টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ছক্কা মারতে পেরেছেন ৮৪০টি। ম্যাচ প্রতি ছক্কার হার ৪.২৬। যা কদিন আগে ছিলো আরও কম। তুলনা করলে আরেকটু পরিষ্কার হয়। আফগানিস্তান দল যেমন ম্যাচ প্রতি ছক্কা মারে ৬.০২ টি করে।

ছক্কার সামর্থ্য বাড়াতে পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়াড উডকে এশিয়া কাপের আগে নিয়ে আসে বাংলাদেশ। তার ক্লাসে ব্যাটাররা নিজেদের শরীরের সামর্থ্য বুঝে কীভাবে বড় শট বের করতে হয় সেই তালিম নিয়েছেন। এই শিক্ষা কতটা কাজে লাগবে এশিয়া কাপে হবে তার পরীক্ষা।

ছক্কা মারার ঘাটতির জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে এই জায়গায় উন্নতির ছাপ দেখা যাচ্ছে। যদিও অধিনায়ক লিটন দাসের মতে কেবল ছক্কা নয়, খেলতে হবে চতুর ক্রিকেট। অনুশীলনের আগে সংবাদ সম্মেলনে ছক্কার প্রসঙ্গ উঠতেই লিটন একটা ভারসাম্য টানার চেষ্টা করলেন, 'টি-টোয়েন্টি সংস্করণে আপনি যখন বড় বড় ছক্কা মারবেন, এটা একটা প্লাস পয়েন্ট। যেকোনো বিপদে বা এমন পরিস্থিতি থেকে আপনি বের হয়ে আসতে পারবেন।'

'কিন্তু একই সঙ্গে আপনাকে এটা বুঝতে হবে প্রতি ম্যাচে ছক্কা মারলেই চলবে না। আপনাকে বুঝতে হবে বাউন্ডারি কতখানি আছে, প্রতিপক্ষ কেমন। আমার মনে হয় শুধু ছক্কা মারার চেষ্টার থেকে, আমাদের স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে হবে।'

ছক্কা মারার আবার ফেইজ আছে। পাওয়ার প্লের কারণে টপ অর্ডার ব্যাটারদের সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ থাকে কম। তাদের বড় শটের দিকেই যেতে হয় শুরুতে। মিডল অর্ডারের সময় আবার যেহেতু ফিল্ডিং ছড়িয়ে যায় তখন স্ট্রাইক রোটেট করার চিন্তাটাও থাকাটা দরকার। মাঝের ওভারে এখানে আড়ষ্টতা দেখা যাচ্ছে। লিটন অবশ্য বলতে চাইলেন, টপ অর্ডার ভালো করাতেই নাকি মিডল অর্ডারের তেমন পারফর্ম করা লাগেনি, 'আমরা টপ অর্ডাররা খুব ভালো পারফরম্যান্স করেছি। মিডল অর্ডারের হাতে খুব বেশি একটা দায়িত্ব আসেনি। আমি বিশ্বাস করি, মিডল অর্ডারের হাতে যখনই দায়িত্ব আসবে, তারা ঘুরে দাঁড়াবে। আগেও করেছে এবং তারা করে দেখাবে।'