দুই ওপেনারের ফ্রি খেলাই হবে বাংলাদেশের সাফল্যের পূর্বশর্ত: সুজন
মোহাম্মদ আশরাফুলের সুরে সুর মিলিয়ে ফাইনাল খেলার আশার বাণী শোনালেন খালেদ মাহমুদ সুজনও। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক, ম্যানেজার টিম ডিরেক্টর এর আশা, এবারের এশিয়া কাপের ফাইনার খেলবে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী থেকে জাগো নিউজের সাথে মুঠোফোনে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সুজন বলেন, ‘আমি খুব খুব আশাবাদী আমাদের দলকে নিয়ে। আমার আশা এবারের এশিয়া কাপে আমরা ফাইনাল খেলবো। আর ফাইনাল খেললে যে কোন দিন যে কোন ঘটনা ঘটে যেতে পারে। দিনটা আমাদের হলে আমরাও এশিয়া কাপ জিতে নিতে পারি।’
হংকংয়ের সাথে ম্যাচ দেখার পরও আপনার মনে হয়েছে এই দলের পক্ষে ফাইনাল খেলা সম্ভব? সুজনের আশাবাদী জবাব, দেখেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট যখন খেলে তখন, হংকংকে একদম হেলাফেলা করা যায় না। এটা ঠিক পারফরমেন্স হয়তোবা আরও বেটার করতে পারতাম। আরও কম উইকেট হারিয়ে ৮ কিবা ৯ উইকেটে জেতা যেত। তারপরও আমার মনে হয় জেতাটা বড়।
ইনিংসের ৫ নম্বর ওভারে হংকংয়ের ২ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের বোলাররা পরের ১৩ ওভারে দুটির বেশি উইকেটের পতন ঘটাতে পারেননি। তার একটি আবার রান আউট। হংকংয়ের মত দূর্বল, অনভিজ্ঞ ও কমজোরি দলের বিপক্ষে এমন নির্বিষ বোলিংয়ের পরও আপনি আশাবাদি?
সুজনের ব্যাখ্যা, বোলিং খারাপ হয়নি। তবে আরও বেটার হতে পারতো। বোলাররা এক্সট্রা এফোর্ট দিয়েছে। হ্যাঁ, এক সময় আমরা কোন উইকটের পতন ঘটাতে পারিনি। এমন নয় বোলাররা ট্রাই করেনি। তাসকিন ট্রাই করেছে। তানজিম সাকিবও প্রাণপন চেষ্টা করেছে ব্রেক থ্রু উপহার দিতে। খুব ভাল লাগছে, দ্য ওয়ে সাকিব বোল্ড। ব্রেক থ্রু পেলে ভাল হতো। আর আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ১৪০ প্লাস খুব বড় না। বেশ ভাল ব্যাটিং উইকেট। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সিনিয়র কোচের চোখে আসলে ব্যাটিংয়ে।
তার অনুভব ও উপলব্ধি হলো, দুই ওপেনার ইমন আর তানজিদ তামিম নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে এই রান আরও অনেক সহজে এবং কম উইকেট হারিয়ে আরও আগেই টপকে যেতে পারতো বাংলাদেশ।
সুজন মনে করেন, দুই তরুণ মারকুটে ওপেনার তানজিদ তামিম ও পারভেজ ইমন এ মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। তাদের ভাল খেলা, ফ্রি খেলা, হাত খুলে খেলার পাশাপাশি বড় ইনিংস উপহার দেয়ার উপর বাংলাদেশের সাফল্য নির্ভর করছে।
তাই দুই তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনারের কার্যকর পারফরমেন্সের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান অভিজ্ঞ ক্রিকেট যোদ্ধা সুজন। ‘আমার মনে হয় ওই দুই তরুণ অ্যাটাকিং ওপেনার এখন আমাদের টিমের খুব ইমফরট্যান্ট প্লেয়ার হয়ে গেছে। ওরা ফ্লাইং স্টার্ট দিলে খুব ভাল হয়। আমরা পাওয়ার প্লে’তে রান পাই। পরের দিককার ব্যাটাররা স্বচ্ছন্দে খেলতে পারে।’
কিন্তু কালকে হংকংয়ের বিপক্ষে তামিম ও ইমনের কেউ রান পায়নি। আমি ওদের আক্রমণাত্মক মেজাজ, হাত খুলে খেলা এবং বিগ ও পাওয়ার হিটিং খুব পছন্দ করি। পাশাপাশি ওদের কাছ থেকে লম্বা ইনিংসও চাই। ওদের মনে করিয়ে দিচ্ছি, অ্যাটিচ্যুড যতই পজিটিভ থাকুক না কেন, ওদের কাছ থেকে রানও চায় দল। হাত খুলে খেলে অল্প সময়ে কিছু রান করে ফেরা চলবে না। ওদের দুজনার রান করাটাও দরকার। আমি আশা করবো ইমন ও তানজিদ তামিমের অন্তত একজন প্রায় খেলায় লম্বা খেলবে। তাতে স্কোরবোর্ড সচল হবে। বাকিরা ফ্রি খেলতে পারবে। হংকংয়ের সাথে ওদের একজন বড় রান করতে পারলে ভাল লাগতো।
অধিনায়ক লিটনের রানে ফেরা ও রান করা দেখে সন্তুষ্ট কোচ সুজন। লিটন ফর্মে আছে, এটা ভেরি পজিটিভ। রান করে লিড দিচ্ছে এটাও গুড সাইন। লিটনের পাশাপাশি যদি দুই ওপেনার তামিম ও ইমনের কাছ থেকে ভাল কিছুর আশায় সুজন।
তার উপলব্ধি, বাংলাদেশের ভাল কিছু করতে হলে তামিম- ইমনের ভাল খেলা, আগ্রাসী, আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি রান করাটাও খুব প্রয়োজন। দুই ওপেনার ফ্রি খেলার পাশাপাশি বড় ইনিংস খেলতে পারলে মিডল অর্ডারে বাকিরাও খুব স্বচ্ছন্দে খেলে রান গতি বাড়াতে পারবে।
এআরবি/আইএইচএস/