মাত্র ২৭ টেস্ট পর শচিনের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভেঙে দেবেন রুট!

মাত্র ২৭ টেস্ট পর শচিনের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভেঙে দেবেন রুট!

‘বাজবল ক্রিকেটে’র যুগ এখন। বিশেষ করে ইংল্যান্ড এই বাজবল ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে। ক্রিকেটের নতুন ফরমেশনের যুগে একজন ব্যাটার তরতর করে শচিন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে রিকি পন্টিং, রাহুল দ্রাবিড়কে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন জো রুট। এবার সামনে শচিন টেন্ডুলকার। তাকে পেছনে ফেলার দিকে দ্রুতই এগুচ্ছেন তিনি। আপনি যদি শচিনভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে পছন্দ করুন আর নাই করুন, টেস্ট ক্রিকেটে তার সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙা দেখার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন।

মূলতঃ এখানে কিছু সংখ্যাগত ধারণা তুলে ধরা হবে, যেটা দিয়ে কিভাবে শচিন টেন্ডুলকারের টেস্টে সর্বোচ্চ রানের (১৫৯২১) রেকর্ড ভেঙে দিতে পারেন জো রুট। যিনি এখন টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের (১৩৫৪৩) অধিকারী।

Sachin

Sachin

চলতি দশকের শুরু থেকে জো রুট প্রতিটি টেস্ট ম্যাচে গডড়ে রান করেছেন ৮৯.৬২ করে। যদি তিনি এভাবে ২০২০-এর দশকে প্রতি টেস্টে তার রান তোলার হার অব্যাহত রাখেন (এমন কোনও লক্ষণ নেই যে তিনি ধীরগতিতে খেলছেন), তাহলে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর তালিকার শীর্ষে নিজেকে তুলে নিতে তার আরও প্রায় ২৭টি টেস্ট প্রয়োজন হবে।

সামনে যে ব্যস্ত সূচি রয়েছে, সে হিসেবে ২০২৭ সালের এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত ১৬টি টেস্ট খেলার কথা রয়েছে ইংল্যান্ডের। ততদিনে রুটের বয়স হবে ৩৬ বছর ৪ মাস। ২০২৮ সালে নর্দান হ্যাম্পশায়ারে গ্রীষ্মের শেষে, ইংল্যান্ড কমপক্ষে আরও ১১টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে। তখন রুটের বয়স হবে ৩৭ - ব্যাটারদের খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এটি খুবই স্বাভাবিক একটি বয়স। যদি তিনি জেমস অ্যান্ডারসনের মতো ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ক্যারিয়ার টেনে নিতে পারেন এবং আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে আরও অনেক রেকর্ড যে বিপদে পড়ে যেতে পারে, তা বলাই বাহূল্য।

প্রথমে রুটের রানের সংখ্যা নিয়ে একটু প্রেক্ষাপট তুলে ধরা যাক। তার রান করা কি অন্য সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের তুলনায় খুব সহজ হয়েছে? যদি আপনি তার ক্যারিয়ারের সময়কাল দেখেন, তাহলে দেখবেন- রুট আসলে শীর্ষ পাঁচ রান সংগ্রাহক - শচিন টেন্ডুলকার, রিকি পন্টিং, জ্যাক ক্যালিস এবং রাহুল দ্রাবিড়ের মধ্যে অন্যদের তুলনায় কঠিন যুগেই ব্যাটিং করেছেন।

রুটের ক্যারিয়ারে, টেস্ট ক্রিকেটে সামগ্রিক ব্যাটিং গড় ছিল ২৯.৮৩ রান করে। যদিও তার নিজের গড় শীর্ষ পাঁচ রান সংগ্রাহকের মধ্যে সর্বনিম্ন (সামান্য ব্যবধানে), তবুও তিনি তাদের মধ্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য।

এটা হয়তো দারুন একটি বিষয়; কিন্তু তিনি তার সমসাময়ীকদের মধ্যে যারা সেরা, তাদের সাথে রুটের তুলনা কেমন? এর জন্য আমাদের ফ্যাব ফোরের ক্যারিয়ারগুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। এবং উল্লেখ করতে হবে যে, কেন উইলিয়ামসনের গড় রুটের চেয়ে কিছুটা বেশি এবং স্টিভেন স্মিথের চেয়ে অনেক বেশি। অন্যদের কেউই এত টেস্ট ম্যাচে এই শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পারেননি এবং তাদের কেউই ১১ হাজার টেস্ট রানও অতিক্রম করতে পারেননি। এর মধ্যে বিরাট কোহলি অবসর নিয়েছেন এবং উইলিয়ামসন এমন কোনও দলের (নিউজিল্যান্ড) হয়ে খেলেন না যেখানে টেস্ট সূচি স্থির থাকে। এরপর বয়সেও রুট এই চারজনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট।

অন্যদের কারোরই দেশের মাটিতে বা বিদেশের মাটিতে ৬০০০ রান নেই। রুট উভয় ফ্রন্টেই ৬০০০ রান অতিক্রম করেছেন। ফ্যাব ফোরের অন্যদের তুলনায় রুট প্রতি বছর বেশি টেস্ট খেলেন, এই ব্যাপারটা কিছুটা হয়তো তাকে এগিয়ে রাখবে।

fab four

fab four

ঘরের মাঠে ৭৩২৯ রান করে রুট পন্টিংয়ের পর ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হোম ব্যাটসম্যান। এই তালিকায় শীর্ষে উঠতে তার আর প্রয়োজন ২৫০ রান প্রয়োজন।

রুট তার প্রজন্মের সবচেয়ে সেরা ব্যাটারদের একজন, কারণ তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেন। ইংল্যান্ড এমন একটি দল যারা অন্যদের তুলনায় বেশি ম্যাচ খেলে বলে মনে হতে পারে। যদিও রুটের ক্যারিয়ারে বেশ কিছু উত্থান-পতন এসেছে, নতুন যুগের আগমণ ঘটেছে।

তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গত কয়েক বছরে, ইংল্যান্ড ‘ত্রাণকর্তা’ কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের আগমনে অন্য ধরনের একটি দলে পরিণত হয়েছে। যিনি ২০২২ সালের জুনে যোগ দিয়ে বাজবলের ক্রিকেটের পরিচিতি ঘটিয়েছেন। যার পলে ফ্যাব ফোরের (কোহলি, স্মিথ, উইলয়ামসন ও জো রুট) মধ্যে জো রুটের টেস্ট স্ট্রাইক রেটই সর্বোচ্চ।