আমাদের রাজস্ব আয়ের কাঠামো বদলাতে হবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পুরোনো ধাঁচে আটকে থাকা বাংলাদেশের জন্য সম্ভব নয়। আমাদের রাজস্ব আয়ের কাঠামো বদলাতে হবে। উন্নয়ন বাজেট এখনো বিদেশি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বেসরকারি খাতের উদ্ভাবনী বিনিয়োগ বিদেশি অর্থায়নের বিকল্প হয়ে ঘাটতি পূরণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
আজ বুধবার ঢাকায় কেয়ার বাংলাদেশ, লাইটক্যাসল পার্টনার্স ও ডেভলার্নের যৌথভাবে আয়োজিত ‘দ্য নেক্সট ফ্রন্টিয়ার’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। দুই দিনের এই সম্মেলনের প্রথম দিনের আলোচনায় পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন, ভবিষ্যতের কর্মসংস্থান ও কৃষি খাতের উন্নয়নের মতো বিষয়গুলো উঠে আসে। দিনের শেষ পর্বে ‘উন্নয়ন খাতের ভবিষ্যৎ: বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। বক্তারা বলেন, গতানুগতিক করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার কাঠামো পরিবর্তন করে ব্যবসায়িক কৌশলের সঙ্গে জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যের সমন্বয় জরুরি।
করপোরেট, ব্যাংক, নীতিনির্ধারণ ও উদ্ভাবনী খাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এতে অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা, বিনিয়োগ ও ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে প্রথম দিনে আলোচনা হয়েছে।
সম্মেলনে কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাস বলেন, ‘যখন দৃঢ় বিশ্বাসে গড়ে ওঠে পুঁজি, ঐতিহ্যের সঙ্গে প্রযুক্তি মেশে এবং লক্ষ্য থাকে বাজার সম্প্রসারণের, তখন উন্নয়ন কেবল অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক প্রভাবও সৃষ্টি হয়। এভাবেই উদ্দেশ্যসমৃদ্ধ উন্নয়নের মাধ্যমে জাতি এগিয়ে যায়।’
সম্মেলনে বলা হয়, এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এনজিও এবং কোম্পানিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতা গড়ে তোলা। কেয়ার বাংলাদেশ তাদের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা ও অংশীদারত্বের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদি স্বচ্ছ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলনের শেষে একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা প্রণীত হবে, যার মাধ্যমে নতুন প্রকল্প শুরু করার সুযোগ তৈরি হবে।
১৯৪৫ সালে ‘কেয়ার প্যাকেজ’ দিয়ে যাত্রা শুরু করে কেয়ার। বর্তমানে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংস্থা। সাত দশকের বেশি সময় ধরে জরুরি ও বিপর্যয়কালীন পরিস্থিতিতে সহায়তা প্রদানে অভিজ্ঞ সংস্থাটি নারী ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেয়। ২০২৪ অর্থবছরে কেয়ার বাংলাদেশ ৪০টির বেশি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছেছে, যার ৬৩ শতাংশই নারী।