ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলে ভিপি (সহসভাপতি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচিত হলে কোনো সংগঠনের নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করব। আবিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে অনেকে প্রশ্ন করেন যে নির্বাচিত হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা নাকি সংগঠনের (ছাত্রদল) কথা শুনব? আমাকে যারা নির্বাচিত করবেন, তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। আমি অবশ্যই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়ে কাজ করব।
ডাকসু নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বিকালে তিনি যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেন। দীর্ঘ আলাপে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সোজাসাপটা জবাব দেন। ক্যাম্পাসের বটতলায় দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে নির্বাচনের চলমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ, শিক্ষার্থীদের অধিকার ও গুণগত শিক্ষার মান নিশ্চিত করাসহ নানা বিষয় উঠে আসে। সব প্রশ্নেরই খোলামেলা জবাব দেন ছাত্রদল সমর্থিত এই ভিপি প্রার্থী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার হুমায়ুন কবির।
শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য কোয়ার্টার হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের গবেষণায় দক্ষতা বৃদ্ধির যথাযথ সুযোগ তৈরি করে দিতে পারছে না। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারছে না। ফলে সুস্থ অবস্থায় একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
দাপ্তরিক কাজে ভোগান্তির কথা জানিয়ে ভিপি প্রার্থী আবিদুল বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটা কাজে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে আমরা পুরো সিস্টেমকে ডিজিটালে রূপান্তর করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। শিক্ষার্থীদের হাতে একদিকে কলম অন্যদিকে বিজনেস করার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে আমি এবং আমার সংগঠন কাজ করবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যেন মানসিক প্রশান্তি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিপূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ও নজর থাকবে।
হলের পরিবশে নিয়ে তিনি বলেন-গণরুম, গেস্টরুম সংস্কৃতি চিরতরে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে মূলোৎপাটন করা হবে। ক্যান্টিনে ফাউ খাওয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক যে অপসংস্কৃতিগুলো ছিল, সেসব অপসংস্কৃতি চিরতরে মূলোৎপাটন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র ছাত্রদলের গণ-অভ্যুত্থানে পূর্ণাঙ্গ স্টেক থাকার পরও সেই স্টেক বা অধিকার কাজে লাগিয়ে বিজয়ের ৫ আগস্ট থেকে এই ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত কোনো রকম অনধিকার চর্চা করিনি আমরা। কোনো সচিবালয়ে যাইনি। মন্ত্রণালয়ে যাইনি। অধিদপ্তরে যাইনি। একমাত্র ছাত্রসংগঠন হিসাবে আমরাই স্বচ্ছতার প্রমাণ দিয়েছি। বাদবাকি যে সংগঠন দেখতে পাচ্ছেন, তারা অনধিকার চর্চা করেছে; যার প্রমাণ জাতির সামনে আছে।’
নারী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, মেয়েদের সব ধরনের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি চিকিৎসা ও খাবারের মানও নিশ্চিত করব। এছাড়া মেয়েদের এক হল থেকে অন্য হলে প্রবেশ করতে যেসব সমস্যার কথা বলা হচ্ছে তা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যথেষ্ট অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল করার চেষ্টা করেছি। অন্য প্যানেলগুলোয় বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা ভিপি-জিএস-এজিএস পদে প্রার্থী হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ছাত্রদল পুরোপুরি আলাদা।