মানবাধিকার কমিশন পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্ল্যাটফর্ম হতে পারে

মানবাধিকার কমিশন পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নে প্ল্যাটফর্ম হতে পারে

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের মোট ২৪৪ জন শিক্ষক। তারা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের সার্বভৌমত্ব, শিক্ষা, সংস্কৃতি, এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এই শিক্ষকরা এক বিবৃতিতে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।

বিবৃতি তারা বলেছেন, শুরুতে তিন বছরের প্রকল্প হিসেবে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন স্থাপন করা হলেও এটি দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। আর দীর্ঘমেয়াদে এ মানবাধিকার হাইকমিশন চললে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ সংকীর্ণ হয়ে যেতে পারে।

এতে আরও বলা হয়েছে, আমরা বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজ ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের ঘোষণায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা মনে করি, এ সিদ্ধান্ত দেশের সার্বভৌমত্ব, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসগঠনের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

তারা বলেন, যদিও মানবাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে জাতিসংঘের ‘মানবাধিকার’ ধারণা অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পূর্বে দেখা গেছে, এ ধরনের আন্তর্জাতিক অফিস পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন- এলজিবিটি (LGBTQ+), ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড, গর্ভপাতের বৈধতা ইত্যাদি। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ পরিপন্থি এসব বিষয় আমাদের পাঠ্যক্রমে চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা ও সমাজে বিভ্রান্তি ও সংকট তৈরির যৌক্তিক শঙ্কা আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে।

এসব শিক্ষকরা বলছেন, বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হলো- এ অফিস প্রাথমিকভাবে তিন বছরের প্রজেক্ট হিসেবে দেখানো হলেও বাস্তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে রূপ নিতে পারে, যা ভবিষ্যত সরকারের স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ সংকীর্ণ করে দিতে পারে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বের যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস রয়েছে, সেসব দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রশ্নবিদ্ধ। উপরন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্ত জনগণের মতামত ও জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থি। আমরা মনে করি, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনগণের মতামত, ধর্মীয় নেতৃত্ব, জাতীয় সংসদ ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত ছিল। দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি-সার্বভৌমত্ব এবং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার স্বার্থে আমরা এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতা শিক্ষকদের মধ্যে ৫০ জন অধ্যাপক, ৪১ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৭৮ জন সহকারী অধ্যাপক এবং ৭৫ জন প্রভাষক। এখানে ক্লিক করুন।