রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ১২ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে ছাত্রদল ও রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জ প্যানেল।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এ প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন।
দুই প্যানেলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তফশিল ঘোষণার পর থেকেই ছাত্রশিবির নিয়ম ভেঙে হলে হলে শিক্ষার্থীদের আতর, খাবারসহ নানা উপঢৌকন দিচ্ছে। এমনকি ব্যালট নাম্বার প্রদানে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। বক্তারা এটিকে আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার ঘাটতি বলে উল্লেখ করেন।
এ সময় ছাত্রদল ও রাকসু ফর র্যাডিক্যাল চেঞ্জসহ সমন্বিত প্যানেল ১২ দফা দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার ও ভোট শুরুর আগে সাংবাদিক ও এজেন্টদের উপস্থিতিতে তা উন্মুক্ত করা, ভোটারদের আঙুলে অমোচনীয় কালি ব্যবহার, এক দিনের মধ্যে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশ, ম্যানুয়াল ভোট গণনা, নির্বাচনী খরচ ও পোস্টারের সংখ্যা নির্দিষ্টকরণ, ব্যালট ছাপানো ও বাঁধাই পর্যন্ত এজেন্টদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত বুথের ব্যবস্থা, ডিজিটাল বোর্ডে ভোটার নাম্বার প্রকাশ, সাইবার বুলিং প্রতিরোধে কার্যকর সেল গঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বিভ্রান্তিকর পেজ-গ্রুপ বন্ধ করা, ভোটের দিন ভোটার তালিকা হাতে ধরিয়ে না দেওয়া।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ হাজার ভোট ম্যানুয়ালি গণনা করার ফলে ২ দিনেও ফলাফল হয়নি ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। রাবিতে ৩০ হাজার ভোট ম্যানুয়ালি গণনা করা হলে বিশৃঙ্খলা হবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে মেহেদী মারুফ বলেন, জাতীয় নির্বাচনে দেখেছি ইভিএমের মাধ্যমে কিভাবে ভোট কারচুপি করা হয়, রাকসুতেও এমন হতে পারে। এছাড়াও ইভিএমে ক্যারিকেচার করার মাধ্যমে ভোট কারচুপি হতে পারে। আমরা চাই, প্রশাসন বেশি জনবল নিয়োগ করে ম্যানুয়ালি ভোট গণনা করুক।
এ সময় ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূরউদ্দীন আবীর বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গণনা করা হলে কারচুপি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চাই, দীর্ঘদিন পর যেহেতু নির্বাচন হচ্ছে, তাই নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়। আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স স্থাপন, ম্যানুয়ালি ভোট গণনাসহ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এই ১২ দফা দাবি জানিয়েছি। ডাকসু ও জাকসুতে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, আমরা চাই না রাকসুতে এ বিতর্ক হোক। ভোটার সংখ্যা বেশি হলে আপনারা জনবল বাড়িয়ে ভোট গণনা করবেন।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রতীক্ষিত এ নির্বাচন যেন কোনোভাবেই কলঙ্কিত না হয়। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক একটি রাকসু নির্বাচন। এই ১২ দফা বাস্তবায়ন করা হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য রাকসু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।