নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি করে এক শ্রমিককে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘শ্রমিক বাঁচলে বাঁচবে দেশ’, ‘চাইলাম ভাত খাইলাম বুলেট’, ‘চাইলাম ন্যায্য অধিকার খাইলাম গুলি’, ‘হাবীব হত্যার বিচার চাই’, ‘শ্রমিকের জীবনের দায় কে নিবে?’, ‘আমার ভাইয়ের বুকে গুলি কেন? ইন্টেরিম জবাব চাই’সহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইন্টেরিম সরকারের কাছে আমাদের আশা ছিল না যে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করে মানুষ হত্যা করবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা কিন্তু তারা আমাদের ওপর গুলি করে। আমরা বিগত ১৫ বছরে স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে গুলি করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের চিত্র দেখেছি।
বর্তমানেও একই চিত্র দেখতে পাচ্ছি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ ঘটনার বিচার ও নিহত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি নূর আলম বলেন , আমাদের এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ প্রতিটি লড়াইয়ে শ্রমিকরা রক্ত দিয়েছে। এ দেশ শ্রমিকদের কারণে সচল রয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা কখনো তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়নি, তারা বঞ্চিতই থেকে গেছে।
৫ আগস্টের পরে আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখলেও এখনো আগের মতো একইরকম বৈষম্য রয়ে গেছে। শ্রমিকদের ন্যায্য আন্দোলনে যৌথবাহিনী গুলি করে শ্রমিক হত্যা করায় ইন্টেরিম সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, উত্তরবঙ্গ বরাবরই বৈষম্যের শিকার। দেশের প্রতিটি সরকার উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বৈষম্য করেছে। খেটে খাওয়া মানুষের শ্রমে আমাদের দেশ চলে।
জুলাই আন্দোলনে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়েছে। কথা ছিল ইন্টেরিম সরকার ন্যায়ের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন দেশ পরিচালনা করবে; কিন্তু তারা বারবার জুলাইযোদ্ধাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এই শ্রমিক হত্যার দায় ইন্টেরিম সরকারকেই নিতে হবে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।
নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকরা ২০ দফা দাবিতে টানা ৪ দিন আন্দোলন করছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে হাবীব ইসলাম নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষে আরও ৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।