১. ‘ওয়েপনস’
এক রাতে ১৭টি শিশু হঠাৎ ঘর ছেড়ে অন্ধকারে হারিয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় রহস্য, কোথায় গেল তারা, কেন গেল? ‘বারবারিয়ান’ দিয়ে আলোচনায় আসা পরিচালক জ্যাক ক্রেগার একেবারেই ভিন্নভাবে এই ভৌতিক কাহিনি বুনেছেন। শিশুদের শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, অভিভাবক, পুলিশ—প্রত্যেকের দৃষ্টিকোণ থেকে ধাপে ধাপে এগোতে থাকে কাহিনি। নীরবতা, গা শিউরে ওঠা ভয়ের মুহূর্ত, রক্তাক্ত দৃশ্য, অদ্ভুত হাস্যরস—সবকিছুর অনন্য মিশ্রণে ছবিটি হয়ে উঠেছে ভিন্নধর্মী হরর। ৮ আগস্ট মুক্তির পর এক সপ্তাহ হয়েছে, এর মধ্যেই জ্যাক ক্রেগারের সাইকোলজিক্যাল হরর ও ডার্ক কমেডি ছবিটি ছুঁয়েছে নতুন মাইলফলক।
চলচ্চিত্রবিষয়ক অনলাইন গণমাধ্যম স্ক্রিন র্যান্ট জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ছবিটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ১০ কোটি ডলার, যা আর-রেটেড হরর ছবির জন্য বড় সাফল্য। ছবিটির বাজেট ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার। ছবিতে স্কুলশিক্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই সময়ের আলোচিত তরুণ অভিনেত্রী জুলিয়া গার্নার।
২. ‘হায়েস্ট টু লোয়েস্ট’
স্পাইক লি পরিচালিত এই থ্রিলারে অভিনয় করেছেন ডেনজেল ওয়াশিংটন ও জেফরি রাইট। আকিরা কুরোসাওয়ার ‘হাই অ্যান্ড লো’ থেকে অনুপ্রাণিত হলেও সিনেমাটিজুড়ে স্পাইক লির ছাপ স্পষ্ট। একজন সংগীত ব্যবসায়ীর ছেলেকে অপহরণ ঘিরে কাহিনি, যেখানে বর্ণ, শ্রেণি, নৈতিক দ্বন্দ্ব—সব একসঙ্গে মিশে গেছে তীব্র ভিজ্যুয়াল ও প্রাণবন্ত সংগীতে।
৩. ‘ব্রিং হার ব্যাক’
অস্ট্রেলিয়ার যমজ পরিচালক ড্যানি ও মাইকেল ফিলিপো আবারও দেখালেন তাঁদের প্রতিভা। ইউটিউবে হরর ভিডিও বানিয়ে দুনিয়াজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। জিতেছেন বহু পুরস্কার। ২০২৩ সালে তাঁরা সুপারন্যাচারাল হরর সিনেমা ‘টক টু মি’ বানিয়ে চমকে দেন। সানড্যান্স উৎসবে প্রিমিয়ারের পর দুনিয়াজুড়ে হইচই পড়ে যায়। দুই বছরের বিরতির পর এবার তাঁরা হাজির ‘ব্রিং হার ব্যাক’ নিয়ে।
চলতি বছরের ২৯ মে অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তির পরই আলোচনায় আসে সিনেমাটি। পরে এটি যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেয় প্রযোজনা সংস্থা এ২৪। ১ আগস্ট যুক্তরাজ্যে মুক্তি পায় ‘ব্রিং হার ব্যাক’। ১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি এর মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ২৩ মিলিয়ন ডলার ব্যবসা করেছে, পেয়েছে সমালোচকদের উচ্চ কণ্ঠ প্রশংসাও। বিলি ব্যারেট, সোরা ওং, স্যালি হকিন্স ও জোনা রেন ফিলিপস অভিনয় করেছেন সিনেমাটিতে।
৪. ‘মেটেরিয়ালিস্টস’
সেলিন সংয়ের এই চলচ্চিত্র আধুনিক যুগে টাকার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ককে নতুনভাবে তুলে ধরেছে। ডাকোটা জনসন এক পেশাদার ম্যাচমেকারের চরিত্রে, যিনি নিজের জীবনে দুই পুরুষের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। একদিকে ক্রিস ইভানস-সংগ্রামী অভিনেতা; অন্যদিকে পেদ্রো প্যাসকলকে দেখা গেছে এক ধনকুবের চরিত্রে। ২০২৩ সালে এই নির্মাতার সিনেমা ‘পাস্ট লাইভস’ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এবারেরটি ততটা না হলেও মোটাদাগে পছন্দ করেছেন বেশির ভাগ দর্শক-সমালোচক
৫. ‘দ্য ব্যালেড অব ওয়েলেস আইল্যান্ড’
ব্রিটিশ কমেডি, যেখানে এক লটারিজয়ী তাঁর প্রিয় ফোক ব্যান্ডকে আবার একত্র করতে চান। টম বাসডেন, টিম কি ও ক্যারি মালিগান অভিনীত ছবিটি আবেগ, নস্টালজিয়া আর হাস্যরসে ভরপুর। জেমস গ্রিফিতের সিনেমাটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে সানড্যান্স উৎসবে প্রিমিয়ারের পর ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
৬. ‘লারকার’
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ভক্তি থেকে অন্ধ ভক্তি, সেখান থেকে বিপজ্জনক আসক্তি—এই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার সেই সম্পর্ককে চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করেছে। একজন দোকানকর্মী হঠাৎ এক পপস্টারের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন আর তারপরই শুরু হয় ভয়ংকর পরিণতি। এ ছবিও সানড্যান্সের প্রিমিয়ারের পর আলোচনায় আসে। অ্যালেক্স রাসেল পরিচালিত এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন থিওডোর পেলেরিন ও আচি মেডেকোয়ে।
৭. ‘কম্প্যানিয়ন’
ড্রু হ্যানককের প্রথম সিনেমা, যা একই সঙ্গে সায়েন্স–ফিকশন, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেল। বনভূমিতে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে এক তরুণ দম্পতির সামনে খুলে যায় অপ্রত্যাশিত রহস্য। টেক-স্যাটায়ারের জন্য এটি প্রশংসিত হয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোফি থ্যাকচার।
৮. ‘সিনার্স’
রায়ান কুগলারের নতুন চলচ্চিত্র, যেখানে মাইকেল বি জর্ডান অভিনয় করেছেন যুগল চরিত্রে। ১৯৩২ সালের মিসিসিপিকে পটভূমি করে এটি একদিকে যুগান্তকারী ভ্যাম্পায়ার ফিল্ম, অন্যদিকে বর্ণবাদ, পরিবার, কুসংস্কার আর ব্লুজ সংগীতের আখ্যান। চলতি বছরের অন্যতম আলোচিত এই হরর সিনেমায় বাণিজ্যিকভাবেও সফল হয়েছে। ১০০ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি বক্স অফিস থেকে ৩৬৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
৯. ‘আর্ট ফর এভরিবডি’
শিল্পী টমাস কিনকেডের জীবন ও ক্যারিয়ারকে ঘিরে নির্মিত এই তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে ‘শিল্প’ বলতে কী বোঝায় সেই বিতর্ক। একজন ধর্মভীরু পারিবারিক মানুষ হিসেবে নিজের ইমেজ ধরে রাখলেও তথ্যচিত্রটিতে কিনকেডের অন্ধকার দিকও উঠে এসেছে।
১০. ‘ওয়ারফেয়ার’
অ্যালেক্স গারল্যান্ড ও রে মেনডোজার যৌথ নির্মাণে তৈরি হয়েছে যুদ্ধনির্ভর ড্রামা সিনেমাটি। যুক্তরাষ্ট্রের নেভি সিলস ও আল-কায়েদার মধ্যে এক যুদ্ধের পটভূমিতে তৈরি ছবিটি দর্শককে একেবারে যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে নিয়ে যায়। কোনো প্রেক্ষাপট বা রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, এখানে শুধু যুদ্ধের ভয়াবহতা, যন্ত্রণার আর্তনাদ আর টিকে থাকার লড়াই দেখানো হয়েছে।