১৯৯৪ সালের মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতা ছিল ভারতের গ্ল্যামার দুনিয়ার ইতিহাসে অন্যতম মাইলফলক। সেবার সুস্মিতা সেন জিতেছিলেন মিস ইন্ডিয়ার মুকুট, ঐশ্বরিয়া রাই হয়েছিলেন রানার-আপ। এরপর সুস্মিতা হন মিস ইউনিভার্স, আর ঐশ্বরিয়া জয় করেন মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট। কিন্তু তাঁদের রুমমেট শ্বেতা মেনন পাননি সেই বিশ্বজোড়া খ্যাতি। সুস্মিতা, ঐশ্বরিয়াদের মতো তিনিও অভিনয়ে এসেছিলেন, কিন্তু সেভাবে নাম কামাতে পারেননি। তবে ভিন্ন পেশায় গিয়ে ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন।
বলিউড-মালয়ালম সিনেমায় ছোট ছোট চরিত্র
শ্বেতা মেনন পরে বলিউডে অভিনয় করেন শাহরুখ খানের ‘অশোকা’, সালমান খানের ‘বন্ধন’ ছবিতে। পাশাপাশি মালয়ালমের বেশ কিছু সিনেমায় ছোট চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে।
নতুন ইতিহাস গড়লেন
নায়িকা হয়ে উঠতে না পারলেও শ্বেতা মেনন ভিন্নভাবে জায়গা করে নিয়েছেন। ২০২৫ সালে তিনি মালয়ালম চলচ্চিত্রশিল্পীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মালয়ালম মুভি আর্টিস্টসের প্রথম নারী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
ঐশ্বরিয়ার স্মৃতি
সম্প্রতি ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে অংশ নিয়ে শ্বেতা বলেন, ‘আমি ছিলাম ঐশ্বরিয়ার রুমমেট, আর সুস্মিতা জয় করেন মুকুট। আমি গিয়েছিলাম মিস ইন্ডিয়া এশিয়া প্যাসিফিকে, আর্থিক সহায়তা বা পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই তৃতীয় রানার-আপ হতে পেরেছিলাম। সেই রোমাঞ্চ আজও মনে আছে। এখন আমি আমার মেয়ে সাবাইনার মধ্যেও সেই উচ্ছ্বাস দেখি। আজকের দিনে সবাইকেই মডেল মনে হয়।’
বিতর্ক ও সংগ্রামের গল্প
মালয়ালম মুভি আর্টিস্টস নির্বাচনের সময় শ্বেতার বিরুদ্ধে পুরোনো কিছু ছবির দৃশ্য নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সমাজকর্মী মার্টিন মেনাচেরি মামলা করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেখানে যত বাধা আসে, আমি তত সফল হই। মামলাটি মানুষ হিসেবে আমাকে ভেঙে দিয়েছিল। অথচ ওই ছবিগুলোই আমাকে এনে দিয়েছিল রাজ্য পুরস্কার। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব নাকি মামলায় লড়ব—বড় দ্বিধায় পড়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের সমর্থনই আমাকে সাহস দিয়েছে।’
নায়িকা হয়ে ওঠা হয়নি শ্বেতা মেননের, কিন্তু দুই দশক পর আজ তিনি মালয়ালম চলচ্চিত্রজগতের ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি হিসেবে নিজেকে নিয়ে গেছেন এক ভিন্ন উচ্চতায়।
তথ্যসূত্র: ডিএনএ