বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হরতাল চলছে
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে জেলাজুড়ে টানা দুই দিনের হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে হরতাল বাস্তবায়ন করছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা–কর্মীরা। এ কর্মসূচি চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছয়টা পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশনের নতুন সীমানা পুনর্বিন্যাসে জেলার একটি সংসদীয় আসন কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনার প্রতিবাদে এই কর্মসূচির ডাক দেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত বাগেরহাটের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
এদিকে আজ সকাল আটটা থেকে হরতালের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে মিছিল শুরু করেছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা–কর্মীরা। সাড়ে আটটায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মিছিল করেন জামায়াত-বিএনপির নেতা–কর্মীরা। এ সময় তাঁরা হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেন। চারটি আসন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) হুঁশিয়ারি দেন। যত দিন পর্যন্ত চারটি আসন ফিরিয়ে না দেবে, তত দিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা।
দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। গত ৩০ জুলাই ইসি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন সীমানা অনুযায়ী বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এর বিরুদ্ধে স্থানীয় নেতা–কর্মীরা ও সচেতন নাগরিক সমাজ আন্দোলনে নেমে পড়ে। তাঁরা ইসির শুনানিতেও অংশ নেন।
তবে গণশুনানির পরও ৪ সেপ্টেম্বর ইসি চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে, যেখানে বাগেরহাটে তিনটি আসনই বহাল রাখা হয়। এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় রাজনীতিকেরা বলছেন, গণমানুষের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
আসন কমানোর প্রতিবাদে জেলার সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জানিয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে আরও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এই কাঠামো বজায় ছিল। তখনকার সীমানা ছিল: বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
ইসির চূড়ান্ত সীমানার গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসনের সীমানা: বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।