ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল অবরোধ

বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে তৃতীয় দফা আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে সোমবার জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

বিএনপি জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা এ হরতাল চলাকালে জেলার ছয়টি মহাসড়কের উপর দিয়ে দূরপাল্লাার ৪৮টি রুটসহ আন্তঃজেলায় যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সকাল থেকে সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পিকেটিং করছে। এ কারনে মোংলা বন্দরে পণ্য পরিবহণের কাজও বন্ধ রয়েছে।

সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার অফিসসহ জেলা উপজেলার সব সরকারি অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে হরতালের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা মিছিল করেন।

এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা এসব সরকারি অফিসে ঢুকতে পারেননি। জেলার সব উপজেলায় সর্বাত্মক হরতাল পালিত হচ্ছে। পূর্ণদিবস হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধে কার্যত মোংলা বন্দর ও বাগেরহাট জেলা সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় মোংলা ইপিজেড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বাগেরহাট বিসিকসহ জেলার সব শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা আসতে না পারায় কল-কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

তবে সনাতন ধর্মলম্বীদের আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব ও জেলার নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দোকানপাট ও রিকশা-ভ্যান চলাচল হরতালমুক্ত থাকায় জীবনযাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। জেলায় কোনো ভাংচুরসহ অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

একই দাবিতে বিএনপি জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি মঙ্গল ও বুধবার (১৬-১৭ সেপ্টেম্বর) দুইদিন বাগেরহাট জেলাব্যাপী সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতালের ডাক দিয়েছে।

এর আগে দুই দফা হরতাল, সরকারি অফিসে অবস্থান ধর্মঘট ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।

সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালাম বলেন, বাগেরহাটে ৪টি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা জেলাব্যাপী পূর্নদিবস হরতালে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব ও জেলার নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দোকানপাট ও রিকশা-ভ্যান চলাচল হরতালমুক্ত রাখা হয়েছে। যার কারণে আজকের হরতালে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি নেই।

তিনি বলেন, জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে হবে। বাগেরহাটবাসীর ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আরো কঠোর আন্দোলন চলবে।

নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এ চুড়ান্ত গেজেটে বাগেরহাট-২ সদর আসনটি কেটে বাগেরহাট-১ ও বাগেরহাট-৩ আসনের সাথে যুক্ত করাসহ ৩টি আসনের সঙ্গে নতুন নতুন উপজেলাকে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।

চূড়ান্ত গেজেটে বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা ) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসন করা হয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাট জেলার ৪টি সংসদীয় আসনের সীমানা সীমানা ছিল বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।