হাসিনার আমলে নারী সমাজও নির্যাতন নিপীড়নের হাত থেকে রেহাই পায়নি
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে দেশের নারী সমাজও নির্যাতন নিপীড়নের হাত থেকে রেহাই পায়নি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে মহিলা দলের নেতাকর্মীরা শত প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেও রাজপথ ছেড়ে যাননি। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ায় যখন ফেলানির লাশ ঝুলছিল, তখনো অনেক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। সেই কারণে শেখ হাসিনার অনুগত পুলিশ বাহিনীর লাঠির আঘাত সহ্য করতে হয়েছে। আজও তারা সেই ব্যথা বহন করে বেড়ায়।
৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যশোর জেলা কমিটি আয়োজিত নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অধ্যাপক নার্গিস বেগম মহিলা দল প্রতিষ্ঠায় যেসব মহীয়সী অবদান রাখেন তাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১৬ মে বলেছিলেন- দেশের অর্ধেক নারী, তাদের পশ্চাৎপদ রেখে জাতির উন্নতি আশা করতে পারি না। তিনি নারী পুরুষ সবাইকে দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত করেন। নারীর যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করেছিলেন। যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছিলেন। নারী আজ কর্মক্ষেত্রে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দ্বার উন্মুক্ত করেন, পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়া সেটিকে সম্প্রসারিত করেছিলেন।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান নারীদের নিশ্চিত ও নিরাপদ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি আইন করে নারীদের যৌতুকের অভিশাপ থেকে রক্ষা করেছিলেন। জাতীয় মহিলা সংস্থা এবং মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের সূচনা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া আইন করে নারীদের অ্যাসিড সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। নারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে ছিলেন। শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আজ নারীরা শিক্ষাক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরি তারেক রহমান আগামী দিনে জনগণের ভোটের দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে তিনিও নারীদের উন্নয়নের কাজ করবেন। তিনি নারীদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করবেন, যে কার্ডের টাকা দিয়ে নারীরা সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারবেন।
জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী বেগম, সদর উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি হাসিনা ইউসুফ, নগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা সুলতানা, জেলা মহিলা দলের যুগ্ম-সম্পাদক রাফাতআরা ডলি, আনোয়ারা পারভীন আনু, নুরুন্নাহার, আলেয়া বেগম, পারুল বেগম প্রমুখ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর মহিলা দলের সভাপতি শামসুন্নাহার পান্না এবং সদর উপজেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিনা পারভীন শেলী।