মৌলভীবাজারের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাজতখানা থেকে মো. মকদ্দুছ মিয়া (৩৫) নামের এক আসামির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পিবিআই কর্তৃপক্ষ বলছে- মৃত মকদ্দুছ হাজতখানার দরজার গ্রিলে লুঙ্গি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় হাজতখানায় কর্তব্যরত এসআই হেলাল উদ্দিনের দায়িত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের টিভি হাসপাতাল সড়কের পিবিআই কার্যালয়ের হাজতখানায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত মকদ্দুছ জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে।
পিবিআই পুলিশ জানায়, কমলগঞ্জের নন্দগ্রামের লিটন হত্যা মামলার ঘটনায় রোববার অভিযুক্ত মকদ্দুছ মিয়া স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও তার শ্যালককে নিয়ে স্বেচ্ছায় কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। সন্ধ্যার পর তদন্তের জন্য মকদ্দুছকে থানা থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পিবিআইর হাজতখানায় রাখা হয়। ভোরে হাজতখানায় লুঙ্গি দিয়ে দরজার গ্রিলে ঝুলন্ত অবস্থায় মকদ্দুছকে দেখতে পান হাজতখানার দায়িত্বরত এসআই হেলাল উদ্দিন। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মৌলভীবাজার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. জাফর হোসেন ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি মকদ্দুছ মিয়া লিটন হত্যা মামলায় অজ্ঞাত আসামি ছিলেন। অভিযুক্ত এক আসামি তার নাম জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করলে সে রোববার কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণের পর রাতে হস্তান্তর করা হয় আমাদের কাছে। পরবর্তীতে তদন্তের জন্য পিবিআইতে আনা হয় মকদ্দুছকে। সোমবার ভোরে লুঙ্গি দিয়ে হাজতখানার দরজার গ্রিলের সঙ্গে আত্মহত্যা করেছেন মকদ্দুছ।
এ সময় আপনার ডিউটি অফিসার কোথায় ছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে কোনো অবহেলা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেনের উপস্থিতিতে লাশ সুরতহাল করা হয়।
উল্লেখ্য, কমলগঞ্জের পতনউষারে গত ৯ আগস্ট লিটন নামে এক যুবকের গলাকাটা লাশ ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে মকদ্দুছ গা-ঢাকা দেন। লিটন হত্যার ঘটনায় শামীম নামে আরও একজন আসামিকে আটক করেছে পিবিআই। গত ১১ সেপ্টেম্বর লিটনের বাবা ছত্তার মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মূলত ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে রোববার কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করে মকদ্দুছ।