ছবি: সংগৃহীত

‘অনকলে’ ডিউটি করেন আরএমও

চিকিৎসকের অভাবে খুঁড়িয়ে চলা মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজের সুবিধামতো ডিউটি করেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুলতান আহম্মেদ। শুধু কাগজে-কলমে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে নাম থাকলেও ডিউটিরত সময়ে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায় না। সপ্তাহের ৩/৪ দিন সকালে শুধু ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে দুপুরে ২টার আগে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর বিকাল পাঁচটা থেকে কালীগঞ্জ শহরের দারুস শেফা পাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন।

এদিকে মহেশপুর উপজেলা জানা গেছে, আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদে থাকা সুলতান আহম্মেদের নিজ গ্রামের বাড়ি মহেশপুর শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটারের দুরত্ব। পদে তিনি আবাসিক মেডিকেল অফিসার হলেও সরকারি কোন কোয়ার্টার কিংবা মহেশপুর শহরের কোথাও থাকেন না তিনি। ডিউটি থাকা দিনগুলোর সকালে শুধু ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা ও উন্নতি হওয়া রোগীদের ছাড়পত্র দিয়েই ডিউটি শেষ করেন। এরপর ফিরে যান নিজ বাড়ী কালীগঞ্জে। কাগজে-কলমে তিনি মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটিতে থাকলেও তিনি স্বশরীরে কালীগঞ্জ শহরের দারুস শেফা পাইভেট হাসপাতালে নিয়মিত পাঁচটার পর থেকে রোগী দেখেন।

সরজমিনে গত রোববার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিয়ে দেখা যায় কাগজে-কলমে আজকের ডিউটিরত মেডিকেল অফিসারের তালিকায় আরএমও সুলতান আহম্মেদের নাম। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোথাও তিনি নেই। ইমারজেন্সিতে সুলতান আহম্মেদের খোঁজ করলে জানা যায় তিনি কালীগঞ্জের নিজ বাড়িতে আছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বলেন, মেডিকেল অফিসারা বেশি ভাগ সময় ডিউটি করেন না। যার ফলে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সব ধরনের ইমারজেন্সি রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয়। মারামারি রোগীদের নোট লেখার কথা মেডিকেল অফিসারদের কিন্তু তারা না থাকায় সেগুলো আমাদের লিখতে হয়।

রোববার রাতে ইমারজেন্সিতে সেবা দেওয়া উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মামুন হোসেন বলেন, রাতে মেডিকেল অফিসারের তালিকায় আরএমও সুলতান আহম্মেদ ছিলেন। তবে তিনি অনকলে ছিলেন।

সোমবার দুপুরে আরএমও সুলতান আহম্মেদ মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি জানান, এই মাত্র ডিউটি শেষ করে বের হয়েছি। রোববার রাতে আপনার ডিউটি থাকলেও আপনি উপস্থিত ছিলেন না এছাড়াও আপনি ৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে কিভাবে অনকলে চিকিৎসা দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনকলে ছিলাম না। রাতে অনকলে ছিলেন ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে তালিকায় আপনার নাম কেন জানতে চাইলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হেদায়েত বিন সেতু বলেন, মেডিকেল অফিসার কম থাকায় আরএমও সুলতান আহম্মেদের দিয়ে রোস্টার ডিউটি করানো হচ্ছে। ডিউটি শেষ করে তিনি কালীগঞ্জের নিজ বাড়িতে থেকে অনকলে রয়েছেন। এছাড়াও উিউটির তালিকায় নাম থাকা একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার কিভাবে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে অবস্থায় করেন এ প্রশ্নের কোন সদউত্তর দিতে পারেননি তিনি।