জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম, মহাসচিব রুহুল আমিন
জাতীয় পার্টিতে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশের সম্মেলনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং মহাসচিব হয়েছেন রুহুল আমিন হাওলাদার।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েল পার্টি সেন্টারে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা নির্বাচিত হন। পাশাপাশি এই অংশের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশিদ এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়েছেন সাবেক মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু।
তবে জি এম কাদের অংশ এই সম্মেলনসহ পুরো প্রক্রিয়াকে ‘বেআইনি’ এবং ‘গঠনতন্ত্রবিরোধী’ বলে মনে করছে। তারা এই সম্মেলনে অংশও নেয়নি।
গত ৩০ জুলাই ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এক আদেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন, যা পরবর্তী ধার্য তারিখ ১২ আগস্ট পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে গঠনতান্ত্রিক পন্থায় সম্মেলন করে দলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হয়েছে জি এম কাদেরের বিরোধী অংশ
আজকের সম্মেলনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কাউকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে না। যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের কাজের মূল্যায়নের ভিত্তিতে দলের ভালো পদে দেওয়ার চেষ্টা করব। আরেকটি দিক হলো, আমরা অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা উপহার দেব, পাশাপাশি একটি আদর্শিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করব। আমরা চেষ্টা করব বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের।’
নতুন কমিটি নির্বাচনের আগে নতুন মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির শাসনামলে কোনো মায়ের কোল খালি হয়নি। আমরা লক্ষ করেছিলাম, জাতীয় পার্টি থেমে যাচ্ছে, পার্টি টুকরা টুকরা হচ্ছে এবং যাঁরা মূল দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। কিন্তু আমরা বলতে চাই, জাতীয় পার্টি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না; বরং জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আজকের এই কাউন্সিল অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।’
নতুন এই কমিটি নির্বাচনের আগে কাউন্সিলের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় পার্টির বর্তমান গঠনতন্ত্রের ২০(ক) ধারাটি বিলুপ্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে নতুন কমিটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘আজকের কাউন্সিল অনেক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পার্টিকে মানুষ স্বৈরাচার বলে, এর একমাত্র কারণ ২০(ক) ধারা। এটা অসাংবিধানিক ধারা। আমরা আলোচনার ভিত্তিতে এই ধারা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম।