দুটি আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়ায় হরতালের ডাক
পাবনা-১ ও পাবনা-২ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে বেড়া উপজেলা। এ বিষয়ে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি আগামীকাল রোববার উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের পাশাপাশি সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা এসেছে।
আজ শনিবার সকালে বেড়া পৌরসভার ফকির রাইস মিল প্রাঙ্গণে এক জরুরি সভায় এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও বেড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ফজলুর রহমান ফকির।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বেড়া পৌরসভা, উপজেলার চার ইউনিয়নের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতৃত্ব, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে ‘৬৮ পাবনা-১ সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করেন। তাঁরা নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক সীমানা পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
কমিটির নেতারা জানান, পাবনা জেলায় মোট পাঁচটি সংসদীয় আসন রয়েছে।
এগুলোর মধ্যে স্বাধীনতার পর থেকেই পাবনা-১ আসনটি পুরো সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। অন্যদিকে পাবনা-২ আসনে বেড়া উপজেলার বাকি পাঁচটি ইউনিয়ন পুরো সুজানগর উপজেলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নতুন সিদ্ধান্তে সাঁথিয়া উপজেলাকে এককভাবে পাবনা-১ আসন এবং বেড়া ও সুজানগর উপজেলাকে মিলিয়ে পাবনা-২ আসন হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বেড়া উপজেলার মানুষ। বক্তাদের অভিযোগ, এ সিদ্ধান্ত মূলত একটি রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতেই নেওয়া হয়েছে।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, বেড়ার ভৌগোলিক অবস্থান সাঁথিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলেও সুজানগরের সঙ্গে যোগাযোগ দুরূহ ও দীর্ঘ পথের। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা জানান, বেড়া উপজেলা সদরের সঙ্গে সাঁথিয়ার দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার হলেও সুজানগরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার।
সভায় বক্তব্য দেন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান ফকির, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন ইকবাল, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম দীপু, বেড়া নৌবন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী ইকবাল, চতুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন মোল্লা, রিকশা-ভ্যান চালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন খাজা, শ্রমিকনেতা জাকির হোসেন প্রমুখ।
এ আন্দোলনের সঙ্গে বেড়া বাজার বণিক সমিতি, ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতি, স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতি, কাপড় ব্যবসায়ী সমিতি, চাউল ব্যবসায়ী সমিতি, বন্দরঘাট শ্রমিক সমিতি, নাকালিয়া বন্দর ব্যবসায়ী সমিতি, নাকালিয়া নৌশ্রমিক সমিতিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা সংহতি প্রকাশ করেন।
এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর একই দাবিতে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন তাঁরা। অবরোধের কারণে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে এবং কয়েক ঘণ্টা জনভোগান্তি তৈরি হয়। এ ছাড়া এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়রা নানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।