বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার রুকন সমাবেশ

‘জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জুলাই চেতনা বাস্তবায়ন হবে’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জনগণ আগামীতে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে জুলাই চেতনার বাস্তবায়ন হবে। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশিত বৈষম্যহীন, ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের এক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে। রাষ্ট্র কাঠামোর প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সকল হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার নিশ্চিত করা হবে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার রুকন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রে মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি। এই ঘোষণাপত্রে একটি দল খুশি হওয়ায় জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওই দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী চব্বিশকে একাত্তরের ওপরে স্থান দিচ্ছে বলা দলের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান না হলে আপনাদের দলের নেত্রীকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারতেন না। এমনকি আপনাদের দলের আগামীর নেতা ফাঁসির দণ্ড থেকেও রক্ষা পেতো না। আজ আপনারা যাদের রক্তের বিনিময়ে লম্বা লম্বা কথা বলছেন, তাদের ত্যাগকে স্বীকার না করে, মর্যাদা না দিয়ে, গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের পক্ষে কথা না বলে শুধু নির্বাচন নির্বাচন করছেন। ১৭ বছর পালিয়ে থাকার পর ছাত্র-জনতা আপনাদেরকে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে। অথচ সেই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকা এখন পর্যন্ত করা হয়নি কেন?- এই বিষয়ে আপনাদের নিরবতায় জাতি হতাশ।

এসময় তিনি, ভারতের ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নোয়াবে না জামায়াতে ইসলামী উল্লেখ করে বলেন, জামায়াতে ইসলামী দক্ষিণপন্থী হলে তারা উত্তরপন্থী ভারতীয় চাটুকার। দক্ষিণপন্থী মানে ডান। উত্তরপন্থী মানে বাম, বাম মানে ভারতীয় ষড়যন্ত্রে একাত্মতা প্রকাশ করে দেশ ও জাতিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কাছে গোলামীর জিঞ্জিরে বন্দী করে রাখা।

জামায়াতে ইসলামী নারী বিদ্বেষী নয়, নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অগ্রদূত উল্লেখ করে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন, ইনসাফ ও ন্যায় বিচারের এক কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়। যেখানে রাষ্ট্রের কাছে নারী-পুরুষের কোন বৈষম্য থাকবে না। দলমত, ধর্মবর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর কোন বৈষম্য থাকবে না।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের কাছে সকলেই রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে সমান মর্যাদা ও অধিকার লাভ করবে। অথচ জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ট্যাগ লাগিয়ে নানা রকম অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যতই অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করা হোক, দুনিয়াবি কোন শক্তি প্রয়োগ করে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না। কারণ জামায়াতে ইসলামীর প্রধান শক্তি সংগঠনের আদর্শ ও নীতিবান রুকন এবং কর্মীরা, যারা অন্যায় করে না, অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়। ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে তিনি উপস্থিত রুকন সদস্যদের অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি তৎপর ও ত্যাগ স্বীকারের আহ্বান জানান।

শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমির সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমির মাওলানা শরীফুল ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার মজলিসে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।