পাঁচ শিক্ষার্থী নিয়ে শ্রেণিকক্ষের মেঝে ধসে পুকুরে
বগুড়ার আদমদীঘিতে ক্লাশ শুরুর আগেই পাঁচ শিক্ষার্থীসহ মেঝে ধসে পুকুরের পানিতে পড়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণিকক্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অল্পের জন্য শিশুরা বেঁচে যাওয়ায় সবাই শুকরিয়া আদায় করেছেন। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা এজন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অসতর্কতা ও অবহেলাকে দায়ী করেছেন। দুর্ঘটনার পরপরই উপজেলা শিক্ষা অফিস ওই কক্ষে পাঠদান বন্ধ করে দিয়েছে।
এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামে বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পুকুরের পাশে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্লাশ শুরুর আগে শিশু শ্রেণিকক্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল। হঠাৎ করে কক্ষের মেঝে ধসে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়।
এ সময় সেখানে থাকা শিশু শিক্ষার্থী হুমায়রা, জিসান ও অলকসহ পাঁচজন পড়ে যায়। তবে তাদের কারো কোন ক্ষতি হয়নি। শিশুরা ভয়ে চিৎকার দেয়।
স্থানীয় সজল হোসেন ও শহিদুল ইসলাম অভিযোগে জানান, গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক শ্যামনাথ বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে খুবই উদাসীন। স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই যেকোনো কাজ করেন। স্কুলে কোনো বরাদ্দ এলে সে টাকা কোন খাতে ব্যবহার করেন তা কাউকে বলেন না। তার উদাসীনতার কারণে স্কুলের লেখাপড়ার অবস্থা শোচনীয়। অবকাঠামোর অবস্থা বেহাল। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্লাশ শুরুর আগেই শিশু শ্রেণির মেঝে ধসে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। এতে কয়েকজন শিশু নিচে পড়লেও তারা অল্পের জন্য বেঁচে গেছে।
তারা দাবি করেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্যরা সচেতন হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। এ ব্যাপারে তারা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামনাথ বলেন, অনেক দিন আগে পুকুরের ওপর এ বিদ্যালয়ের কক্ষ নির্মাণ করা হয়। কিছুদিন আগে উত্তর দিকে গাইডওয়াল নির্মাণ করা হয়। তিনি যোগদানের পর থেকে কোনো বরাদ্দ না আসায় মেঝে সংস্কারের কাজ করা সম্ভব হয়নি।
আদমদীঘি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, শিশু শ্রেণির মেঝে ধসের খবর পেয়েই বিদ্যালয়ে যান এবং ওই ক্লাশ রুম বন্ধের নির্দেশ দেন। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রহিম প্রধান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশু শ্রেণির কক্ষের এক কোণে মেঝে দেবে গেছে। কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হয়নি; মেরামত না হওয়া পর্যন্ত অন্য কক্ষে ক্লাশ নেওয়া হবে। এছাড়া মেঝে ধসের ঘটনায় কারো অবহেলা বা গাফিলতি থাকলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।