দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, পৌর বিএনপির সভাপতিসহ ৩৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা

দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, পৌর বিএনপির সভাপতিসহ ৩৬ নেতাকর্মীর নামে মামলা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা সদরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি বেদার উদ্দিন বিদ্যুৎ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে প্রতিপক্ষ পৌর বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমানসহ ৩৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দেশীয় ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) যে মঞ্চে কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল, সেটি ফাঁকা পড়ে আছে। মঞ্চের পেছনে বসে রয়েছে পুলিশ। বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় কর্মসূচি বাতিল হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের ডাইংপাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে। প্রশাসন ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা সদরে কর্মসূচি করে রাজশাহী-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি চেয়ারপারসন মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

বিকাল ৪টার দিকে দুইপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের গ্রুপের অন্তত সাতজন আহত হন।

এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা এবং পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব উল্লেখযোগ্য।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে বুধবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ। বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরে সেনাবাহিনী টহল দেয়।

মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সদস্য সুলতানুল ইসলাম তারেক গ্রুপের নেতা পৌর বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, শরীফ উদ্দিনের অনুসারীরা চরম অসিহষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। আমরা প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। তারা দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছেন।

অন্যদিকে শরীফ উদ্দীন গ্রুপের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রথমে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত সাতজন নেতাকর্মী আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, একটি মামলা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড হয়েছে এবং তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।