দিনাজপুরে সাত দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীরা রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডেছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরে সাত দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ

দিনাজপুরে সাত দফা দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। পরে তাঁরা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে বাঁশ ফেলে অবরোধ শুরু করেন।

এদিকে রেলপথ অবরোধ করায় পঞ্চগড় থেকে ঢাকা ও রাজশাহীগামী দুটি ট্রেন আটকা পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করায় শহরে উভয় পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে সকাল নয়টা থেকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সাত দফাসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার ফেস্টুন হাতে সড়কে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় মাইকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের সাত দফা দাবি উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। বেলা ১১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অবরোধ কর্মসূচি চলছিল।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোহাম্মদ সিফাত বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাত দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করে আসছি। যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি আমরা। সেই দাবি না মেনে উল্টো আন্দোলন করলে গুলি করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলোর প্রতি ও আন্দোলনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আবারও রাস্তায় নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে না, আমরা এভাবেই আন্দোলন করে যাব।’

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে উপসহকারী প্রকৌশলীর পদ কেবল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য রাখতে হবে, ৫০ শতাংশ পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে, ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের এবং ডেস্ক ইঞ্জিনিয়ারিং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে জায়গা দিতে হবে, টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে অন্যত্র স্থানান্তর বন্ধ করতে হবে, বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অনুপাত ১ দশমিক ৫ নির্ধারণ করতে হবে এবং ল্যাব-ওয়ার্কশপ আধুনিকীকরণ, পর্যাপ্ত শিক্ষক, উপকরণ সরবরাহ, ক্রেডিট ট্রান্সফার চালুসহ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতসহ করতে হবে।

এদিকে সড়ক অবরোধ করায় দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন গলিতে তীব্র যানজট দেখা গেছে। প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও রাজশাহীগামী বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রায় দুই হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের জন্য বলেছি। যেহেতু বিষয়টি দীর্ঘদিনের, একদিনে সেটির সমাধান সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীরা কোনো কথা শুনছেন না। যত দ্রুত দ্রুত সম্ভব, অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছ।’

দিনাজপুর রেলস্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস দিনাজপুর স্টেশন প্ল্যাটফর্মে আটকে আছে। দ্রুতযান এক্সপ্রেস দিনাজপুর স্টেশন ত্যাগ করার সময় ছিল সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে।