প্রতীকী ছবি

স্বামীর চাচা ও মামার সামনে কি স্ত্রীর পর্দা করতে হবে?

ইসলামে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা করা ফরজ। এটা কোরআন ও হাদিসের অকাট্য একটি বিধান। তাই যে কোনো মুহূর্তে, যে কোনো পরিস্থিতিতেই এটা মানতে হবে। পালন করতে হবে। কোনোভাবেই লঙ্গন করার সুযোগ নেই। পুরুষের জন্য আত্মীয় বা মাহরাম কিছু নারী ছাড়া অন্য অনাত্মীয় নারীদের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ। একইভাবে নারীদের জন্যও অনাত্মীয় পুরুষদের সামনে নিজেদের সংযত রাখা, শারীরিক সৌন্দর্য প্রকাশ না করা ফরজ।

কিন্তু আমাদের দেশে অনেকে মনে করেন, স্বামীর চাচা বা মামার সামনে অর্থাৎ চাচাশ্বশুর কিংবা মামাশ্বশুরের সামনে স্ত্রী বের হতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন। এটা একটি ভুল চিন্তা।

এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, একজন নারীর চাচা ও মামা তার মাহরাম। অর্থাৎ তাদের সামনে ওই নারী বের হতে পারবেন। কিন্তু স্বামীর চাচা ও মামা অর্থাৎ চাচাশ্বশুর এবং মামাশ্বশুর কখনোই স্ত্রীর মাহরাম হবেন না। তাই তাদের সামনে অবশ্যই পর্দা করতে হবে। এটা ফরজ।

মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মুমিন পুরুষদের বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত রয়েছেন। আর মুমিন নারীদের বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজেদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীন যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারও কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। নারীরা যেন নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা নুর : ৩১)

উল্লিখিত আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বৈবাহিক সম্পর্কে মাধ্যমে ফুফু, খালা, মামা, চাচা মাহরাম গণ্য হন না। কাজেই স্বামীর জন্য স্ত্রীর খালা ও ফুফুর সঙ্গে পর্দা করা ফরজ। একইভাবে স্ত্রীর জন্য স্বামীর চাচা ও মামার সঙ্গে পর্দা করা ফরজ।

হ্যাঁ, বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমেও পুরুষ নারীর ও নারী পুরুষের মাহরাম হয়, দেখা দেওয়া বৈধ হওয়াসহ মাহরামের যাবতীয় বিধান তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। যেমন আয়াতে স্বামীর পিতৃপুরুষদের নারীর মাহরাম বলা হয়েছে অর্থাৎ স্বামীর বাবা, দাদা, পরদাদা স্ত্রীর জন্য মাহরাম। শাশুড়ির বাবা অর্থাৎ দাদা শ্বশুরও স্ত্রীর জন্য মাহরাম। একইভাবে স্ত্রীর মা, নানি, ও পরনানি স্বামীর জন্য মাহরাম। শ্বশুরের মা, দাদিও তার জন্য মাহরাম। পুরুষের জন্য রক্তসম্পর্কিত ফুফু ও খালা মাহরাম, নারীর জন্যও রক্তসম্পর্কিত মামা ও চাচা মাহরাম।