তিউনিশিয়ার প্রাচীন মসজিদ জামে উকবা ইবনে নাফে

তিউনিশিয়ার প্রাচীন মসজিদ জামে উকবা ইবনে নাফে

মওলবি আশরাফ

তিউনিসিয়ার প্রাচীন শহর কায়রোয়ানে অবস্থিত ‘জামে উকবা ইবনে নাফে’ উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে পুরনো মসজিদগুলোর একটি। শুধু ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে নয়, এ মসজিদ যে কোনো দর্শককেই তার সৌন্দর্য দিয়ে বিস্ময়ে অভিভূত করবে। অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত কবি রাইনার মারিয়া রিলকে এর মিনার দেখে বলেছিলেন, ‘ইসলামি স্থাপত্যে এর চেয়ে সুন্দর, এর চেয়ে মহিমান্বিত কোনো প্রাচীন মিনার কি আজও টিকে রয়েছে? শিল্পকলার ইতিহাসে এই তিন স্তরের মিনারকে ধরা হয় এক মাস্টারপিস, যা মুসলিম আর্কিটেকচারের শ্রেষ্ঠতম মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’

প্রায় ৯,০০০ বর্গমিটার (৯৭,০০০ বর্গফুট) আয়তনের এই মসজিদটির ভিত্তি স্থাপিত হয় ৬৭০ খ্রিষ্টাব্দে (৫০ হিজরি), যখন উমাইয়া সেনাপতি উকবা ইবনে নাফে আফ্রিকা জয় করে কায়রোয়ান শহরের গোড়াপত্তন করেন। তবে তার নির্মিত মসজিদ ২০ বছর বাদেই পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। ৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে গাসসান বংশীয় সেনাপতি হাসান ইবনে নুমান মসজিদটি দ্বিতীয়বার নির্মাণ করেন। এরপর অনেকবার সংস্কার হয়। ৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে আগলাবি শাসনামলে আমির জিয়াদাতুল্লাহ পুরো মসজিদটি ভেঙে তৃতীয়বার নির্মাণ করেন। এরপর যদিও মেহরাব ছাড়া পুরো মসজিদে অনেকবার সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে, কিন্তু আমির জিয়াদাতুল্লাহর নির্মিত মূল অবকাঠামো এখনও বহাল আছে। সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে পাঁচ বছরব্যাপী তিউনিশিয়ার জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব ও শিল্পকলা ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধানে মসজিদটির ব্যাপক সংস্কার করা হয় এবং ১৯৭২ সালে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আবার নামাজ শুরু হয়।

তিউনিশিয়ার প্রাচীন মসজিদ জামে উকবা ইবনে নাফে

তিউনিশিয়ার প্রাচীন মসজিদ জামে উকবা ইবনে নাফে