সুরা আনকাবুতে পাপাচারীদের জন্য সতর্কবার্তা

সুরা আনকাবুতে পাপাচারীদের জন্য সতর্কবার্তা

পাপ হলো আল্লাহর অবাধ্যতা, আল্লাহর বিধান ও আদেশ না মেনে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। পাপের সূচনাই হয়েছে আল্লাহর আদেশ অমান্য করার মাধ্যমে। শয়তান আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছিল, ফলে আল্লাহ তায়ালা তাকে অভিশপ্তদের তালিকাভুক্ত করেন। এরপর থেকে শয়তান মানুষকে বিপথে নেওয়ার শপথ গ্রহণ করে।

শপথ অনুযায়ী মানব জাতির পিতা হজরত আদম (আ.)-কে বিভ্রান্ত করে জান্নাত থেকে বের করে পৃথিবীতে নামিয়ে নিয়ে আসে শয়তান। পৃথিবীতে মানুষের শিরা-উপশিরায় ঢুকে ধোঁকা দেয়, বিভ্রান্ত করে, সঠিক পথ থেকে সরিয়ে রাখে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শয়তান আদম সন্তানের শিরা-উপশিরায় বিচরণ করতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭১৯)

মানুষের শিরা-উপশিরায় ঢুকে সে মানুষকে ধোঁকা দেয়। যখন মানুষ কোনো ভালো কাজ করতে চায়, তখন সে তার ভেতর অসলতা তৈরি করে। কুমন্ত্রণা দিয়ে বলার চেষ্টা করে এখন এই কাজটি করার প্রয়োজন নেই। পরে অন্য সময় করবে। নেক কাজের থেকেও অন্য কাজকে তার সামনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপন করে।

আরও পড়ুন

মানুষও শয়তানের কুমন্ত্রণার বিষয়টি বুঝতে না পেরে শয়তানের নেক কাজ থেকে দূরে সরে যায় ও পাপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় পাপ করতে করতে এতোটা উদাসীন হয়ে পড়ে যে, নেক কাজের প্রতি কোনো আগ্রহ থাকে না। তার আচার-আচরণ ও বেপরোয়া ভাব দেখে মনে হয় আল্লাহর শাস্তি থেকে হয়তো বেঁচে যাবে অথবা আল্লাহর শাস্তি থেকে কোথাও আড়ানে লুকিয়ে থাকবে।

পাপাচারে লিপ্ত এমন উদাসী মনোভাবের মানুষদের সতর্ক করা হয়েছে সুরা আনকাবুতে। বলা হয়েছে, তাদের এমন ধারণা ভুল আল্লাহ তায়ালা তাদের পাকড়াও করবেন। বর্ণিত হয়েছে—

اَمۡ حَسِبَ الَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ اَنۡ یَّسۡبِقُوۡنَا ؕ سَآءَ مَا یَحۡكُمُوۡنَ

তবে কি যারা মন্দকাজ করে তারা মনে করে যে, তারা আমার আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে? তাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ! (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ০৪)

অর্থাৎ, পাপাচারীরা কোনোভাবে আল্লাহর পাকড়াও ও শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না। রক্ষা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই নেক কাজের প্রতি উদাসীন না হয়ে আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হওয়া উচিত এবং মনে রাখা উচিত সব কিছু তার আয়ত্তে। তার জানাশোনা ও আয়ত্তের বাইরে কিছুই নেই। তিনি কোনো কিছু সম্পর্কে বেখবর নন।