ইচ্ছা ছিল বিমানের ওপর থেকে লাফ দেওয়ার...

ইচ্ছা ছিল বিমানের ওপর থেকে লাফ দেওয়ার...

প্রথম আলো :

টানা কয়েক মাস যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। অভিনয় ছেড়ে এত দীর্ঘ সময় কেমন কাটল?

টানা কয়েক মাস যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। অভিনয় ছেড়ে এত দীর্ঘ সময় কেমন কাটল?

পারসা ইভানা : আম্মুর কাছে ছিলাম তো, মনেই হয়নি অনেক মাস ধরে দেশের বাইরে আছি। তা ছাড়া ছোটবেলার বন্ধুরা ছিল, ওদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেছি। নাচ ও অভিনয়ের কর্মশালা করেছি। মোটামুটি ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই গেছে। দ্য ফ্রিম্যান স্টুডিওতে অভিনয় কোর্স ছিল ৩ মাসের আর স্টেপস অন ব্রডওয়েতে নাচের ওপর ১৫টি কর্মশালা করেছি।

পারসা ইভানা : আম্মুর কাছে ছিলাম তো, মনেই হয়নি অনেক মাস ধরে দেশের বাইরে আছি। তা ছাড়া ছোটবেলার বন্ধুরা ছিল, ওদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেছি। নাচ ও অভিনয়ের কর্মশালা করেছি। মোটামুটি ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই গেছে। দ্য ফ্রিম্যান স্টুডিওতে অভিনয় কোর্স ছিল ৩ মাসের আর স্টেপস অন ব্রডওয়েতে নাচের ওপর ১৫টি কর্মশালা করেছি।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

ভরতনাট্যমে আপনার বেশ কিছু পুরস্কার আছে। ২০১৪ সালে চ্যানেল আইয়ের সেরা নাচিয়ে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান। এরপরও নাচের কর্মশালা করার পেছনে কোন ভাবনা কাজ করেছে?

পারসা ইভানা : শুধু এবারই যে প্রথম দেশের বাইরে গিয়ে শিখছি, তা নয়; লন্ডন থেকে আকরাম খান যখন এসেছিলেন, তাঁর কাছেও নাচের তালিম নিয়েছি। ওইটাতে অডিশন দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম। নতুন যেকোনো কিছুর ব্যাপারে আমার আগ্রহ। শেখার তো আসলে শেষ নেই। আমি একদম শেষ বয়স পর্যন্ত শিখতে চাই। আমরা অনেক সময় ভাবি, আমি তো জিতেই গেছি, আমার আর শেখার কিছু নেই। এখন আমি শুধুই শেখাব। অনেকে আমাকে বলে, আপু, আপনার কাছে ড্যান্স শিখতে চাই। কিন্তু আমি তো নাচের শিক্ষক নই। এখন এসে মনে হয়, হয়তো চাইলে দু-তিন দিনের কর্মশালা করাতে পারব। কিন্তু তারপরও ওই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য যখনই দেশের বাইরে কোথাও যাই, সেখানকার সংস্কৃতি আয়ত্ত করতে চাই। সে জায়গা থেকেই নাচের কর্মশালা করা, একটা চর্চার মধ্যে থাকা আরকি।

প্রথম আলো :

আর অভিনয়...

আর অভিনয়...

পারসা ইভানা : সত্যি বলতে, অভিনয় শিখে আমি অভিনয় করতে আসিনি। সিনিয়রদের কাছ থেকে, পরিচালকদের কাছ থেকে, মুভি দেখে, বই পড়ে যা বুঝেছি, তা–ই আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি শিখতে চাই। ডিসিপ্লিন শিখতে চাই। একটা কাজের পেছনে ম্যানার্স থাকে, ডিসিপ্লিন থাকে। দেখা যায়, আমরা যখন একটা শুটিংয়ে যাই, চট করে শুটিং করি। বলি, এরপর কী, চলো যাই—এ রকম টাইপ। এর বাইরেও একজন মানুষকে শিল্পী হতে হলে কত ধরনের ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকতে হয়, কত পরিশ্রম করতে হয়, সে বিষয়গুলো জানার জন্য অভিনয়ের কর্মশালা করা। ওখানে এমনও অনেক মানুষ দেখেছি, শুধু নিজেদের উন্নয়নের জন্য বছরের পর বছর কোর্স করছে। তিন মাসের পরও মনে হয়েছে কিছুই শিখতে পারিনি। আরও কয়েক মাস যদি থাকতে পারতাম, তাহলে আরও কিছু জানতে পারতাম। দ্য ফ্রিম্যান স্টুডিওতে যে কোর্সটি করেছি, ওটার নাম বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরা অ্যান্ড প্রিপারেশন। আম্মু যেহেতু ওখানে থাকেন, প্রতিবছর যাওয়া হয়, এখন থেকে যখনই যাব, একটা করে কোর্স করব ভাবছি।

পারসা ইভানা : সত্যি বলতে, অভিনয় শিখে আমি অভিনয় করতে আসিনি। সিনিয়রদের কাছ থেকে, পরিচালকদের কাছ থেকে, মুভি দেখে, বই পড়ে যা বুঝেছি, তা–ই আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি শিখতে চাই। ডিসিপ্লিন শিখতে চাই। একটা কাজের পেছনে ম্যানার্স থাকে, ডিসিপ্লিন থাকে। দেখা যায়, আমরা যখন একটা শুটিংয়ে যাই, চট করে শুটিং করি। বলি, এরপর কী, চলো যাই—এ রকম টাইপ। এর বাইরেও একজন মানুষকে শিল্পী হতে হলে কত ধরনের ডিসিপ্লিনের মধ্যে থাকতে হয়, কত পরিশ্রম করতে হয়, সে বিষয়গুলো জানার জন্য অভিনয়ের কর্মশালা করা। ওখানে এমনও অনেক মানুষ দেখেছি, শুধু নিজেদের উন্নয়নের জন্য বছরের পর বছর কোর্স করছে। তিন মাসের পরও মনে হয়েছে কিছুই শিখতে পারিনি। আরও কয়েক মাস যদি থাকতে পারতাম, তাহলে আরও কিছু জানতে পারতাম। দ্য ফ্রিম্যান স্টুডিওতে যে কোর্সটি করেছি, ওটার নাম বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরা অ্যান্ড প্রিপারেশন। আম্মু যেহেতু ওখানে থাকেন, প্রতিবছর যাওয়া হয়, এখন থেকে যখনই যাব, একটা করে কোর্স করব ভাবছি।

প্রথম আলো :

কী শিখেছেন মনে হয়?

কী শিখেছেন মনে হয়?

পারসা ইভানা : সবচেয়ে বড় যে শিক্ষাটা পেয়েছি, ধৈর্য ও ডিসিপ্লিন, যা আমাদের অনেকের নেই। অনেক সময় সুযোগ না পেলে বা অন্য কারও ভালো কাজ দেখলে আমরা খুব অল্পে অধৈর্য হয়ে যাই। আমি মনে করি, শিল্পীর ধৈর্য ধরে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারটা আমি কিছুটা হলেও শিখেছি।

পারসা ইভানা : সবচেয়ে বড় যে শিক্ষাটা পেয়েছি, ধৈর্য ও ডিসিপ্লিন, যা আমাদের অনেকের নেই। অনেক সময় সুযোগ না পেলে বা অন্য কারও ভালো কাজ দেখলে আমরা খুব অল্পে অধৈর্য হয়ে যাই। আমি মনে করি, শিল্পীর ধৈর্য ধরে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারটা আমি কিছুটা হলেও শিখেছি।

প্রথম আলো :

মায়ের কাছে গেলেন অনেক দিন পর, নিশ্চয় মেয়ের যত্নআত্তি...

মায়ের কাছে গেলেন অনেক দিন পর, নিশ্চয় মেয়ের যত্নআত্তি...

পারসা ইভানা : আর বইলেন না। আম্মু রান্নার কয়েকটা কোর্স করেছে, সব রান্নার প্র্যাকটিক্যাল প্রয়োগ আমার ওপর করেছে। আমার বন্ধুরাও খেয়েছে। আমিও খেয়েছি। সারপ্রাইজিং ব্যাপার হচ্ছে, এত খেয়েও ওজন বাড়েনি।

পারসা ইভানা : আর বইলেন না। আম্মু রান্নার কয়েকটা কোর্স করেছে, সব রান্নার প্র্যাকটিক্যাল প্রয়োগ আমার ওপর করেছে। আমার বন্ধুরাও খেয়েছে। আমিও খেয়েছি। সারপ্রাইজিং ব্যাপার হচ্ছে, এত খেয়েও ওজন বাড়েনি।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

নিজে রান্না করেছেন?

পারসা ইভানা : আমি রান্না পারিই না। আই হেট কুকিং।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

তাহলে আপনার ভালোবাসার কাজ কী?

পারসা ইভানা : আই লাভ টু ড্যান্স। গুনগুন করে গাইতে পছন্দ করি। প্রচুর গান শুনতে ভালোবাসি। আর প্রচুর অ্যাকটিভিটি করতে পছন্দ করি। যেমন এবার আমি ইউএসএ গিয়ে অনেকবার রোলার কোস্টারে উঠেছি। হেলিকপ্টার রাইড করেছি। অ্যাডভেঞ্চার করতে পছন্দ করি। আমার সঙ্গে নাচের বড় ভাই (রাসেল) রোলার কোস্টারে উঠে তো অসুস্থ হয়ে গেছে। কিন্তু সে জায়গা থেকে আমি ছিলাম বিন্দাস। আমার খুব ইচ্ছা ছিল বিমানের ওপর থেকে লাফ দেওয়ার।

প্রথম আলো :

তার মানে বড় অ্যাডভেঞ্চার এখনো বাকি রয়ে গেছে?

তার মানে বড় অ্যাডভেঞ্চার এখনো বাকি রয়ে গেছে?

পারসা ইভানা : এখনো আসেনি আমার জীবনে। ওই যে বললাম, আমি বিমান থেকে লাফ দিতে চাই। এমন জায়গায় লাফ দেব, যেখানে সবাই নিরাপদ বোধ করে। ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ ছবিতে যেমন বিমান থেকে লাফ দিয়েছিল, ওই রকম। ওইটাই আমার হায়েস্ট অ্যাডভেঞ্চার ড্রিম। ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ দেখে মনে হয়েছে, জীবনে এ রকম অ্যাডভেঞ্চার থাকা উচিত। পাঁচ-ছয় বছর আগে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে একবার স্কুবা ডাইভিং করেছিলাম। ওটা ছিল খুবই ভয়ংকর। কারণ, আমি পানি খুব ভয় পাই। এবার অবশ্য নতুন একটা অ্যাডভেঞ্চার করেছি, চালক ছাড়া গাড়িতে উঠেছিলাম। বেশ রোমাঞ্চকর ছিল।

পারসা ইভানা : এখনো আসেনি আমার জীবনে। ওই যে বললাম, আমি বিমান থেকে লাফ দিতে চাই। এমন জায়গায় লাফ দেব, যেখানে সবাই নিরাপদ বোধ করে। ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ ছবিতে যেমন বিমান থেকে লাফ দিয়েছিল, ওই রকম। ওইটাই আমার হায়েস্ট অ্যাডভেঞ্চার ড্রিম। ‘জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা’ দেখে মনে হয়েছে, জীবনে এ রকম অ্যাডভেঞ্চার থাকা উচিত। পাঁচ-ছয় বছর আগে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে একবার স্কুবা ডাইভিং করেছিলাম। ওটা ছিল খুবই ভয়ংকর। কারণ, আমি পানি খুব ভয় পাই। এবার অবশ্য নতুন একটা অ্যাডভেঞ্চার করেছি, চালক ছাড়া গাড়িতে উঠেছিলাম। বেশ রোমাঞ্চকর ছিল।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

সামনে কোথায় এক্সপ্লোর করতে চান?

পারসা ইভানা : আমার সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খুব ইচ্ছা, জানি না কবে হবে। এ ছাড়া তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মরক্কো যেতে চাই। আমার মেয়েবন্ধুদের বলেছি, টাকা জমাও, আমরা গার্লস ট্রিপ দেব শ্রীলঙ্কায়।

প্রথম আলো :

এখন পর্যন্ত যত জায়গা ঘুরেছেন, সবচেয়ে স্মরণীয় কোনটা?

এখন পর্যন্ত যত জায়গা ঘুরেছেন, সবচেয়ে স্মরণীয় কোনটা?

পারসা ইভানা : একবার আমি স্কটল্যান্ডে গিয়েছিলাম, একা। ইউএসএ যাওয়ার আগে লন্ডনে গিয়েছিলাম আমার কাজিনের কাছে, সেখানে গিয়ে তিন দিনের ব্রেক নিয়েছিলাম। আপুকে বলছিলাম, স্কটল্যান্ডে যাব। আপু ছুটি পায়নি। তারপর আমি একাই স্কটল্যান্ডে যাই। আমার মনে হয়, শিল্পীদের একা ট্রিপ দরকার। ওই ভ্রমণে আমি প্রথম স্নোফল দেখি। স্নোফল দেখে অজান্তে কান্না করে দিয়েছিলাম। মনে মনে ভাবলাম, পৃথিবী এত সুন্দর! ট্রেনে করে গিয়েছিলাম। অজানা শহরে আমি একা, তাই কিছুটা হতাশ লেগেছিল। তবে স্কটল্যান্ড আমি দারুণভাবে এক্সপ্লোর করেছি। দেশটা তো ঐতিহাসিক, ৫০০-৬০০ বছর আগের সব ভবন, শুধু ইন্টেরিয়র বদল করেছে, এক্সটেরিয়র বদল করেনি। অদ্ভুত লেগেছিল। নিজের সঙ্গে নিজের ভালো সময় কেটেছিল।

পারসা ইভানা : একবার আমি স্কটল্যান্ডে গিয়েছিলাম, একা। ইউএসএ যাওয়ার আগে লন্ডনে গিয়েছিলাম আমার কাজিনের কাছে, সেখানে গিয়ে তিন দিনের ব্রেক নিয়েছিলাম। আপুকে বলছিলাম, স্কটল্যান্ডে যাব। আপু ছুটি পায়নি। তারপর আমি একাই স্কটল্যান্ডে যাই। আমার মনে হয়, শিল্পীদের একা ট্রিপ দরকার। ওই ভ্রমণে আমি প্রথম স্নোফল দেখি। স্নোফল দেখে অজান্তে কান্না করে দিয়েছিলাম। মনে মনে ভাবলাম, পৃথিবী এত সুন্দর! ট্রেনে করে গিয়েছিলাম। অজানা শহরে আমি একা, তাই কিছুটা হতাশ লেগেছিল। তবে স্কটল্যান্ড আমি দারুণভাবে এক্সপ্লোর করেছি। দেশটা তো ঐতিহাসিক, ৫০০-৬০০ বছর আগের সব ভবন, শুধু ইন্টেরিয়র বদল করেছে, এক্সটেরিয়র বদল করেনি। অদ্ভুত লেগেছিল। নিজের সঙ্গে নিজের ভালো সময় কেটেছিল।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

কাজের খবর বলুন।

পারসা ইভানা : এখন শুধু ফটোশুট করছি। নাটকের চিত্রনাট্য পেয়েছি, ফিরে আসার মতো কোনো গল্প এখনো পাইনি। ভালো গল্প, ভালো পরিচালক পেলে কাজ শুরু করব।

প্রথম আলো :

প্রথম আলো :

নাকি সিনেমার জন্য অপেক্ষা?

পারসা ইভানা : আমার ইচ্ছা সব জায়গায় কাজ করার। নাটক, ওটিটি, ফিল্ম। পরিচালকদের অপেক্ষায় থাকি, তারা কবে কাস্ট করবে। আমি চাইলে তো আর হবে না।