জামাল হোসেন, শাহীন আক্তার ও তাঁদের মেয়ে রঙ্গনছবি : জামাল হোসেনের ফেসবুক

পরিবারসহ নেপালে আটকা পড়েছেন বাংলাদেশি প্রযোজক

বিশৃঙ্খলা–সহিংসতা ও তরুণদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। নেপালের সচিবালয় থেকে এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গতকাল সোমবার থেকে নেপালে বিক্ষোভ চলছে। কারফিউ উপেক্ষা করে আজ মঙ্গলবারও সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নামেন। এদিকে নেপালের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটিতে পরিবারসহ আটকা পড়েছেন নাটক ও সিনেমার প্রযোজক জামাল হোসেন।

প্রযোজক জামাল হোসেন কয়েকটি স্থিরচিত্র পোস্ট করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নেপাল পরিস্থিতিতে নেপালে আমরা বাংলাদেশি অনেক পর্যটক আটকে পড়েছি।’ পোস্টের সূত্র ধরে কথা হয় জামাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘৪ সেপ্টেম্বর আমরা এখানে এসেছি। পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। দুই দিনের মধ্যে পুরো পরিস্থিতি ওলট–পালট হয়ে যায়। এখন আমরা আছি কাঠমান্ডুর হোটেলে। আজ সকাল থেকে আমরা হোটেল থেকে কোথাও বের হতে পারিনি। কাল বিকেলে আমাদের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতি কী হবে বুঝতে পারছি না। শুনেছি, আজ রাত পর্যন্ত সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না।’

জামাল হোসেনের প্রতিষ্ঠান রঙ্গন মিউজিক কয়েক বছর ধরে নিয়মিত নাটক আর ওয়েবফিল্ম বানাচ্ছে। তাদের শুরুটা হয় গানের পৃষ্ঠপোষকতা করার মধ্য দিয়ে। নাটক বানানোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিনেমায়ও বিনিয়োগ করেছে। তাদের প্রযোজিত আলোচিত সিনেমার মধ্যে আছে ‘প্রহেলিকা’। এই প্রতিষ্ঠানের পরের ছবি ‘সখা: সোলমেট’, যেটিতে অভিনয়ের কথা রয়েছে মাহফুজ আহমেদ ও শবনম বুবলীর।

গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল অলির নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গতকাল রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করেন নেপালের কয়েক হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই তরুণ বা জেন-জি প্রজন্মের। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ অন্তত সাতটি শহরে এদিন ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এদিকে বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় অলি সরকার। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে কাঠমান্ডুতে অন্তত ১৭ জন ও ইতাহারিতে ২ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হন চার শতাধিক বিক্ষোভকারী।

বিক্ষোভ দমনে সরকারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। সরকারের ওই দমনমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আজও সকাল থেকে কালঙ্কি, চাপাগাঁও ও কাঠমান্ডুর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও প্রতিবাদ শুরু হয়। পুলিশ রাজধানীর পার্লামেন্ট ভবনের সামনে থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি কাঠমান্ডু, ললিতপুর ও ভাক্তপুর জেলায় আজ সকাল থেকে কারফিউ জারি করা হয়।