বিদেশ সফরের সময় ইমিগ্রেশনে যেসব কথা বলা উচিত নয়
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর ধাপগুলোর একটি হলো ইমিগ্রেশন। এই প্রক্রিয়ায় সামান্য অসতর্কতা বা ভুল মন্তব্য আপনার পুরো সফরের পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দিতে পারে। কারণ, ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা প্রশিক্ষিতভাবে যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করেন, যাতে কোনো সন্দেহজনক ইঙ্গিত পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
ভুল কিছু বললে আপনার প্রবেশ বিলম্বিত হতে পারে বা সম্পূর্ণভাবে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞাও জারি হতে পারে। তাই ইমিগ্রেশনের সময় কী বলবেন না—সে বিষয়ে সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। নিচে এমন ৬টি কথা তুলে ধরা হলো, যা ইমিগ্রেশনে কখনই বলা উচিত নয়।
১. আমার কাছে আর্থিক সামর্থ্যের কোনো প্রমাণ নেই
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা নিশ্চিত হতে চান যে, আপনি ভ্রমণের সময় নিজের খরচ চালাতে পারবেন। আর্থিক প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ক্রেডিট কার্ড, নগদ অর্থ) না থাকলে তারা সন্দেহ করতে পারেন আপনি অবৈধভাবে কাজ করবেন বা রাষ্ট্রীয় সহায়তার ওপর নির্ভর করতে পারেন। ভ্রমণের সময় সদ্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও আয়সংক্রান্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখা উচিত।
২. আমি অনেক নগদ টাকা সঙ্গে এনেছি (বেআইনি পরিমাণ এবং ঘোষণা ছাড়া)
প্রত্যেক দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ নগদ অর্থ বহনের সীমা রয়েছে। এই সীমা অতিক্রম করলে এবং তা যথাযথভাবে ঘোষণা না করলে এটি অর্থপাচার, অবৈধ উপার্জন বা চোরাচালানের সন্দেহ তৈরি করতে পারে। ফলে ভ্রমণের আগে নগদ অর্থ বহনের সীমা জেনে নিন এবং প্রয়োজন হলে যথাযথভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
৩. আমার কাছে ফিরতি বা পরবর্তী গন্তব্যের টিকিট নেই
অনেক দেশে প্রবেশের সময় প্রমাণ দেখাতে হয় যে, আপনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরে যাবেন। ফিরতি টিকিট না থাকলে কর্মকর্তারা ধারণা করতে পারেন, আপনি দেশটিতে থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বা আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারেন। ভিসার শর্ত পূরণের জন্য অবশ্যই ফিরতি টিকিট সঙ্গে রাখা উচিত।
৪. আমার নির্দিষ্ট কোনো ভ্রমণ পরিকল্পনা নেই
অস্পষ্ট বা অনিশ্চিত ভ্রমণ পরিকল্পনা আপনার প্রস্তুতির ঘাটতি ও সন্দেহজনক অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দিতে পারে। কর্মকর্তারা সাধারণত নির্দিষ্ট সময়সূচি, গন্তব্য ও আবাসনের তথ্যসহ একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা চান। আপনার পরিকল্পনা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা দিন।
৫. নিরাপত্তা বিষয়ে রসিকতা বা ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করা
বোমা, অস্ত্র, মাদক, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি বিষয়ে নিছক রসিকতাও ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন। এর ফলে আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হতে পারে, এমনকি আপনাকে আটক বা প্রবেশ নিষিদ্ধও করা হতে পারে। তাই সবসময় সংযত ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখুন।
৬. পরস্পরবিরোধী বা অসংগত তথ্য প্রদান করা
আপনার কথাবার্তা যেন ভিসা আবেদন বা অন্য কাগজপত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। পরস্পরবিরোধী তথ্য কর্মকর্তাদের মনে প্রতারণা বা তথ্য গোপনের সন্দেহ সৃষ্টি করে। এতে করে বাড়তি জিজ্ঞাসাবাদ, গভীর তদন্ত বা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারেন। সব সময় সত্য ও স্পষ্ট উত্তর দেওয়া উচিত।