চীনকে অতিরিক্ত উৎপাদন কমাতে চাপ দিতে হবে, ট্রাম্প প্রশাসনকে ডেমোক্র্যাটদের আহ্বান
এবার চীনকে নিজের অর্থনৈতিক কাঠামো বদলাতে যেন চাপ দেওয়া হয়, সেই আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন ডেমোক্র্যাটরা। চীনকে তথাকথিত ‘অতিরিক্ত কাঠামোগত উৎপাদন’ রোধে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের চীনবিষয়ক সিলেক্ট কমিটির সদস্যরা মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, যেকোনো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তিতে চীনের শিল্প খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন কমানোর বিষয়টি বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে থাকতে হবে। খবর রয়টার্স
চীন দেশীয় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি শিল্পপণ্য উৎপাদন করছে। ফলে বিশ্ববাজারে চীনের সস্তা পণ্যে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। অন্য দেশগুলো চীনের সঙ্গে ‘মূল্যযুদ্ধে’ পেরে উঠছে না। যদিও বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে, সম্প্রতি তারা কিছু খাতে মূল্যস্ফীতি হ্রাস ও মূল্যযুদ্ধ ঠেকাতে অভিযান শুরু করেছে।
রোববার স্পেনের মাদ্রিদে চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লিফেংয়ের নেতৃত্বাধীন দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লাটনিক। তবে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি।
কংগ্রেস সদস্যদের চিঠিতে বলা হয়, চীনের এই উৎপাদনকৌশল যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প, কর্মসংস্থান ও বৈশ্বিক বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত ও সৌর প্যানেল খাতে এর বিরূপ প্রভাব ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। মোদ্দাকথা হলো, চীনের অতিরিক্ত উৎপাদন রোধ করা না হলে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প ও চাকরি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আলোচনায় এটি অন্যতম প্রধান ইস্যু হতে হবে—এটাই হলো ডেমোক্র্যাটদের এই দাবির অন্তর্নিহিত বার্তা।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রকে এ রপ্তানি–সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ কাজে লাগিয়ে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে প্রতিক্রিয়ামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে শুল্কনীতিতে আরও ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রদের ওপরও শুল্ক আরোপ করেছিল। পরবর্তী সময়ে বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি বা পারস্পরিক শুল্কছাড়ের বিনিময়ে কিছু শুল্ক শিথিল করা হয়।
কাঠামোগত অতি উৎপাদন হলো, একটি দেশ নিজের অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি উৎপাদন করছে। এই বাড়তি পণ্য তারা বিশ্ববাজারে রপ্তানি করছে। এতে যা হচ্ছে তা হলো ১. বিশ্ববাজারে দামে চাপ পড়ে, অন্য দেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২. যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে শিল্পকারখানা বন্ধ, কর্মসংস্থান হ্রাসের আশঙ্কা তৈরি হয়। ৩. বৈশ্বিক বাণিজ্যে একধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়।