বিনা মাশুলের ক্রেডিট কার্ড বাজারে ছেড়েছে বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক। অর্থাৎ এই কার্ড নেওয়া থেকে শুরু করে কোনো পর্যায়ে কোনো মাশুল গুনতে হবে না। তবে খরচের পর নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ না করলে ঠিকই সুদ গুনতে হবে। এই কার্ডের নাম ‘জিরো বাই প্রাইম ব্যাংক’। এটি মূলত ভিসা ক্রেডিট কার্ড। এর মাধ্যমে ব্যাংকটি ক্রেডিট কার্ড বা রিটেইল ব্যাংকিং খাতে নিজেদের অবস্থান জোরদার করতে চাইছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় এ ব্যাংকটি করপোরেট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত।
বেতনভোগী ব্যক্তি: মাসিক ন্যূনতম ৭০ হাজার টাকা বেতন হতে হবে।
ব্যবসায়ী: মাসিক ন্যূনতম এক লাখ টাকা আয় হতে হবে।
ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন। বেতনভোগী ব্যক্তিদের জন্য স্যালারি সার্টিফিকেট ও গত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টের পাশাপাশি এনআইডি ও পাসপোর্ট আকারের ছবি আবেদনের জন্য প্রয়োজন হবে।
যদি আপনি আয়ের মানদণ্ড পূরণ না করেন, তাহলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা রেখে এই ক্রেডিট কার্ডটি নিতে পারবেন। এরপর আপনি সেই জমা টাকার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ক্রেডিট সীমা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই কার্ডের প্রধান সুবিধা হলো এটি দেশের প্রথম চার্জ বা মাশুলমুক্ত ক্রেডিট কার্ড। যেখানে অন্যান্য ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার করলে নানা ধরনের চার্জ গুনতে হয়। প্রথমত, এই কার্ডে কোনো ইস্যু ফি নেই এবং কার্ড পেতে আপনাকে কোনো ফি দিতে হবে না। কোনো বার্ষিক ফি নেই এবং অন্য ব্যাংকগুলো বার্ষিক ফি মওকুফের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক লেনদেনের শর্ত দেয়।
এই কার্ড থেকে বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে অর্থ স্থানান্তরে কোনো চার্জ দিতে হবে না। কোনো এসএমএস অ্যালার্ট চার্জ নেই। ফলে লেনদেনের জন্য পাওয়া এসএমএস অ্যালার্টের জন্য আপনাকে কোনো চার্জ দিতে হবে না। কোনো স্টেটমেন্ট ফি নেই। কোনো ইএমআই প্রসেসিং ফি নেই। কোনো ওভার লিমিট ফি নেই। অর্থাৎ যদি আপনি আপনার ক্রেডিট সীমা অতিক্রম করেন, তাহলে আপনাকে ওভার লিমিট ফি চার্জ করা হবে না।
কার্ডটি ভিসা ব্র্যান্ডের ও দ্বৈত মুদ্রার, যা আপনাকে দেশে ও বিদেশে উভয় স্থানে অর্থ খরচ করার অনুমতি দেবে। প্রতি ৫০ টাকা খরচে আপনি একটি রিওয়ার্ড পয়েন্ট অর্জন করবেন। এই রিওয়ার্ড পয়েন্টগুলো নগদেও রূপান্তর করা যায়। কার্ডটি এটিএম থেকে নগদ উত্তোলন ও পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
অন্য ব্যাংকের কার্ডের মতো এই কার্ড থেকে চেক দিয়ে টাকা তুললে ৩ শতাংশ চার্জ দিতে হবে। ব্যাংক হিসাবে সরাসরি তহবিল স্থানান্তর করলে ১ শতাংশ চার্জ দিতে হবে। খরচের পর ৪০ থেকে ৪৫ দিনের গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যে ব্যবহৃত অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে এক হাজার টাকা বিলম্বিত মাশুল দিতে হবে। এ ছাড়া ইজি পে প্ল্যান ও কার্ড প্রতিস্থাপনের জন্য খরচ দিতে হবে। অনলাইনে পিন প্রতিস্থাপন বিনা মূল্যে হলেও পেপারভিত্তিক পিন প্রতিস্থাপনের জন্য ৫০০ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে। এ ছাড়া সিআইবি (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) চার্জ ১০০ টাকা ও বকেয়া স্থিতির ওপর দশমিক ৩৫ শতাংশ বিমা প্রিমিয়াম প্রযোজ্য হবে। নির্দিষ্ট সময়ে সুদ পরিশোধ না হলে বকেয়া স্থিতির ওপর প্রতি মাসে ২ শতাংশ সুদের হার চার্জ করা হবে। পাশাপাশি সব ধরনের চার্জের ওপর সরকারকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।