Advertisement

জামালগঞ্জে স্বাস্থ্য খাতে চরম সংকট দুর্নীতি ও অনিয়মে দুই লক্ষাধিক মানুষ

মানবজমিন

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মঈন উদ্দিন আলমগীরের ব্যর্থতায় হাসপাতালের সেবার মান ভেঙে পড়েছে। রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নিয়োগে দুর্নীতি, সরকারি ওষুধ বিতরণে অনিয়ম, চিকিৎসক ও নার্সদের দায়িত্বে অবহেলা অব্যাহত রয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বক্তারা বলেন, সাত দিনের মধ্যে ডা. মঈন উদ্দিন আলমগীরকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। মানববন্ধনে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- চিকিৎসক ও নার্সদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিতকরণ, নিয়োগে দুর্নীতি তদন্ত, খাবার ও ওষুধে স্বচ্ছতা, বহির্বিভাগে অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ, জরুরি বিভাগে চিকিৎসক নিশ্চিতকরণ, ভর্তি রোগীদের আবাসন সমস্যা সমাধান ও স্বাস্থ্যসেবায় মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আলতাফুর রহমান, কারী আব্দুল কুদ্দুস, তোফায়েল আহমেদ, মো. উজ্জ্বল হোসেন, সাইদুল মুরছালিন, ছাদিকুর রহমান স্বাধীন খান প্রমুখ। জামালগঞ্জ উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কাগজে ৫০ শয্যা থাকলেও বাস্তবে রয়েছে মাত্র ৩১ শয্যা। অথচ প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি হন। ফলে রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ডাক্তারের চেম্বার ফাঁকা। ভর্তি রোগীরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নিম্নমানের খাবার ও পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবার অভাব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হাসপাতালের কর্মী কামাল হোসেন জানান, এখানে তিনজন টিকিট দেয়ার জন্য থাকার কথা থাকলেও তিনি একাই ডিউটি করছেন। এতে রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হয় না। সরজমিন পরিদর্শনের সময় হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক পাওয়া যায় মাত্র দু’জন। ডা. আব্দুল বাতেন (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) ও ডা. শরীয়ত উল্লাহ (মেডিকেল অফিসার)। ডা. বাতেন বলেন, লোকবল সংকটের কারণে পর্যাপ্ত সেবা দেয়া সম্ভব হয় না। প্রায়ই টানা ডিউটি করতে হয়। ডা. শরীয়ত উল্লাহ বলেন, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী আসেন। তুলনায় ডাক্তার সংখ্যা একেবারেই কম। পরিচ্ছন্নকর্মী না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মঈন উদ্দিন আলমগীরকে অফিসে পাওয়া যায়নি।
পরপর তিন দিন অফিসে গেলেও তার দেখা মিলেনি। জামালগঞ্জের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এভাবে অনিয়ম, সংকট ও অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে চললেও উচ্চপর্যায়ের কোনো তদারকি নেই। স্থানীয়রা অবিলম্বে চিকিৎসক সংখ্যা বৃদ্ধি, লোকবল নিয়োগ, খাবার ও ওষুধের মানোন্নয়নসহ হাসপাতালের পরিবেশ উন্নয়নে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

আরও পড়ুন

Lading . . .