Advertisement

অনশনরত ছয় শিক্ষার্থী অসুস্থ, তিনজনকে নেওয়া হলো চিকিৎসাকেন্দ্রে

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায়ছবি: প্রথম আলো
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায়ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে অনশনরত নয় শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে (মেডিকেল সেন্টার) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তিন শিক্ষার্থী হলেন নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর জশদ জাকির ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া।

গতকাল বুধবার দুপুরে প্রক্টর কার্যালয়ে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থী’ ব্যানারে এ অনশন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ৯ শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছেন অনশনে।

অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চিকিৎসাকেন্দ্রে থাকা চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল থেকেই অনশনরত অবস্থায় রয়েছেন নয়জন। প্রশাসন একবার এলেও শিক্ষার্থীদের যে ন্যায্য দাবি, সেটির প্রতি সাড়া দেয়নি। এখন তিনজনকে নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে সেন্টারে এসেছি। ওদিকে প্রক্টর অফিসের সামনে আরও কয়েকজন অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা আর কত অবনতি চাচ্ছে এই প্রশাসন।’

জান্নাতুল ফেরদৌস আরও বলেন, ‘এখানে অনশনরত শিক্ষার্থীদের জন্য চিকিৎসক প্রয়োজন। কিন্তু মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিল না। অ্যাম্বুলেন্সেরও রয়েছে অভাব, যার কারণে রিকশায় করে তাঁদের মেডিকেল সেন্টার নিয়ে আসতে হয়। প্রশাসন কি এখনো শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক মনে করবে না?’

অন্যদিকে প্রক্টর কার্যালয়ের সামনে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (ইউপিডিএফ-সমর্থিত) সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ এবং বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দেকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ মো. শুভ বলেন, ‘জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন তিনজন। সারা দিন অনশনের ফলে তাঁদের রক্তচাপ কমে গেছে। আমরা তাঁদের স্যালাইন দিয়েছি। শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।’

অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাঁরা কোনো আলোচনা বা প্রস্তাব মানবেন না। অন্যদিকে প্রশাসন জানিয়েছে, গত রোববার বিকেলে আলোচনায় বসতে চাইলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁরা আমরণ অনশনে চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনার জন্য ডেকেছিল তাঁদের। কিন্তু অনশনরত শিক্ষার্থীরা তা মানছেন না।

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ছাড়া অনশনরত শিক্ষার্থীদের অন্য দাবির মধ্যে ছিল গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত চিকিৎসার নিশ্চয়তা, ক্যাম্পাসে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা, হামলার ভিডিও প্রকাশকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, প্রকৃত অপরাধীদের বিচার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন।

উল্লেখ্য, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করেন ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’।

Lading . . .